অমিতাভ রথ, ঝাড়গ্রাম: হাতির হামলাকে হাতিয়ার করে গাছ লোপাট। গাছ চোরের দলকে ধরতে এবার স্নিফার ডগের সাহায্য নিচ্ছে বন দফতর। স্নিফার ডগ নিয়ে গাছ চোরেদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হল ঝাড়গ্রামে। হাতির  হামলা নিয়ে যে সাবধানবার্তা দেওয়া হয়, তাকে হাতিয়ার করেই এক দল চদেদার শাল গাছ লোপাট করে চলেছে বলে অভিযোগ। এমন উপায়ে গাছ চুরির ঘটনা আগে দেখা যায়নি। তাই স্নিফার ডগ নিয়ে তল্লাশি শুরু হল। (Jhargram News)


ঝাড়গ্রাম জেলার শোভা বর্ধন করে শালগাছের জঙ্গল। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে, এই শালগাছের জঙ্গলই কার্যত লোপাট হয়ে যাচ্ছে। ফলে জঙ্গলমহলের শোভা যেমন লোপ পাচ্ছে, তেমনই ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশও। শালগাছ নিধন এবং লোপাট রুখতে তাই এবার অভিনব পন্থা নিল বন দফতরও। গ্রামে গ্রামে স্নিফার ডগ নিয়ে চলছে তল্লাশি অভিযান। চোরেদের হদিশ পাওয়া গেলে কড়া ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। (Forest Department)


বন দফতরের সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রাম জেলা জুড়ে ইদানীং হাতির হামলার ঘটনা বেড়ে গিয়েছে একধাক্কায়। লোকালয়ে ঢুকে হাতির দল যাতে তাণ্ডব চালাতে না পারে, তার জন্য কোনও অনভিপ্রেত ঘটনা যাতে না ঘটে, তার জন্য বন দফতর এবং বনরক্ষা কমিটির যৌথ উদ্যোগে হোয়াটসঅ্যাপে হাতির গতিবিধি সংক্রান্ত তথ্য আদানপ্রদান হয়। পরিস্থিতি বুঝে সন্ধে ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত স্থানীয় মানুষজনকে বাইরে বেরোতে নিষেধ কার হয় হোয়াটসঅ্যাপ বার্তার মাধ্যমেই।


আরও পড়ুন: Bangaon News: ওড়াকান্দির মন্দির এবার বনগাঁতেই, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়ে গেল, রাজনীতি দেখছে BJP


অভিযোগ, হোয়াটসঅ্যাপের হাতির গতিবিধি সংক্রান্ত এই তথ্যই গাছ লোপাটের কাজে ব্যবহার করছে চোরেরা। হাতির হামলার ভয়ে নির্ধারিত ওই সময়ে বনরক্ষা কমিটির তরফে সেভাবে নজরদারিও থাকে না। সেই সুযোগে রাতারাতি জঙ্গল থেকে মোটা গুঁড়ির শালগাছ কেটে, পিকআপ ভ্য়ানে তুলে পাচার করে দেওয়া হচ্ছে। এমন একাধিক অভিযোগ ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে বন দফতরের কাছে। শুরুতে সেই নিয়ে তেমন তৎপরতা দেখা না গেলেও, পরিস্থিতি দেখে গা ঝাড়া দিয়ে উঠেছে বন দফতর।


বুধবার রাতেও সাবধানবার্তা দেওয়া হয়েছিল হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে। ঝাড়গ্রাম ব্লকের জোয়ালভাঙা, হদহদি, টিয়াকাটির বনরক্ষা কমিটির লোকজন পাহারা দিতে পারেননি যে কারণে। কিন্তু গাছ চুরি হতে পারে বলে জানানো হয়েছিল আগেই। যে কারণে রাতে টহল দিতে বেরোয় বন দফতর। তাতে দেখা যায়, জঙ্গলে প্রায় ৩০টি শাল গাছ, টুকরো করে কাটা রয়েছে। পাচারের প্রস্তুতি চলছিল। বন দফতরের লোকজনকে দেখে গা ঢাকা দেয় পাচারকারীরা। তবে গাছ কাটার যন্ত্রপাতি এবং গুিল উদ্ধার হয়েছে। তার পর বৃহস্পতিবার সকালে স্নিফার ডগ নিয়ে এসে গ্রামে গ্রামে তল্লাশি চলে। এখনও কাউকে যদিও পাকড়াও করা যায়নি।  গাছ চুরির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন রেঞ্জ অফিসার। নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।