অমিতাভ রথ, ঝাড়গ্রাম : করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এখনও যায়নি। বিশেষজ্ঞ এবং চিকিৎসকরা ইতিমধ্যেই সাবধান করে দিয়েছেন, সেপ্টেম্বরের শুরুতেই আছড়ে পড়তে পারে করোনার তৃতীয় ঢেউ। যা মারাত্মক আকার নেবে অক্টোবরে। তখন পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করতে পারে। তার জন্য আগাম প্রস্তুতি নেওয়া দরকার। তবে সেই পরিস্থিতি সামাল দিতে তৈরি ঝাড়গ্রাম। দেশের বেশিরভাগ অংশ যখন করোনায় আক্রান্ত এবং রোগী মৃত্যুর হার নিয়ে চিন্তিত, সেখানে ঝাড়গ্রামের ছবিটা একেবারে আলাদা। ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের মেডিসিনের ডাক্তার স্নেহাশিস দাস এবং তাঁর সহকর্মী চিকিৎসকদের হার না মানা জেদের ফলে ঝাড়গ্রাম দীর্ঘদিন ছিল গ্রিন জোনে। কারণ, সেখানে করোনায় মৃত্যুর হার ছিল অন্যান্য অঞ্চলগুলির তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। একইভাবে তৃতীয় ঢেউকেও যাতে সামাল দেওয়া যায়, তার জন্য প্রস্তুত ডাক্তার স্নেহাশিস দাস ও তাঁর সহকর্মীরা।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলা কীভাবে করা যাবে? কীভাবে চিকিৎসা হবে? কী কী সরঞ্জাম ব্যবহার করা হবে? আশঙ্কাজনক রোগী থাকলে তার ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে? রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হলে ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটকে কীভাবে ব্যবহার করা হবে? বাচ্চাদের কীভাবে যত্ন নেওয়া হবে? সেসব নিয়ে চিকিৎসক স্নেহাশিস দাসের মেডিকেল কেয়ার ম্যানেজমেন্টের রূপরেখা তৈরি। নিজে এবং আরও কয়েকজন অভিজ্ঞ চিকিৎসককে সঙ্গে নিয়ে অন্যান্য ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের ট্রেনিং দিচ্ছেন তিনি। স্লাইড শোয়ের মাধ্যমে সমস্ত বিষয়টা সকলের কাছে পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দিচ্ছেন। ছোট ছোট দলে ভাগ করে ডাক্তার, নার্স এবং অন্যান্য সাপোর্ট স্টাফদের হাতে কলমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ট্রেনিং দিচ্ছেন স্নেহাশিস দাস।
এই মুহূর্তে ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে করোনা মোতাবিলার তিনটি ইউনিট রয়েছে। পাশাপাশি ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট, ভেন্টিলেটর, হাইপোনেজাল অক্সিজেন ডিভাইস, বাইপ্যাপ, অক্সিজেন কনসেনট্রেটরসহ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার সমস্তরকমের ব্যবস্থা রয়েছে। সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের অন্যান্য রোগীদের পাশাপাশি ডাক্তার স্নেহাশিস দাসের তত্ত্বাবধানে চলছে তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলার ট্রেনিংও। বাচ্চা থেকে বয়স্ক, প্রত্যেকের জন্য আলাদা আলাদা সরঞ্জাম নিয়ে করোনার তৃতীয় ঢেউকে মোকাবিলায় প্রস্তুত ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। তৃতীয় ঢেউয়েও ঝাড়গ্রামবাসীকে একইভাবে সুস্থ রাখবেন, এটাই আশা এই চিকিৎসকের।