রাজীব চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ :  ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কর্পোরেশন (এনটিপিসি)র লোকো পাইলট হিসাবে সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন গোটা জীবন। মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জের গঙ্গেশ্বর মাল। দায়িত্ববান হওয়ায় তাঁর চাকরিজীবনের মেয়াদও বৃদ্ধি করা হয়েছিল । মঙ্গলবারই ছিল তাঁর চাকরিজীবনের শেষ দিন। শেষ বারের মতো মালগাড়ির চালকের আসনে ছিলেন গঙ্গেশ্বর। কিন্তু সেই যাত্রাই হল শেষ-যাত্রা। সারা জীবন দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে আসা মানুষটির জীবন শেষ হয়ে গেল কাজ করতে করতেই। 

ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জের কাছে NTPC-র রেললাইনে দুটি মালগাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হয় ২ জনের। জখম হন ৪ জন। মঙ্গলবার রাত ৩টে নাগাদ দুর্ঘটনা ঘটে। সূত্রের খবর, লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়িকে দ্রুত গতিতে এসে আরেকটি মালগাড়ি ধাক্কা মারে। সাহেবগঞ্জের কাছে ফারাক্কা-লালমাটিয়া MGR লাইনে দুর্ঘটনা ঘটে। ঝাড়খণ্ডের এই  ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ চলে যায় ৬৫ বছরের ওই ইঞ্জিন চালকের। অবসরগ্রহণের ঠিক আগেই চির অবসরে চলে গেলেন  লোকো পাইলট গঙ্গেশ্বর মাল।  মালগাড়ি জমা দিয়ে ফেয়ারওয়েল নিয়ে ঘরে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু শেষ সংবর্ধনাটাই আর নেওয়া হল না। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ জিয়াগঞ্জও। 

ভারতীয় রেলের কোনও সম্পর্ক নেই এই দুর্ঘটনার           

এই দুর্ঘটনার পর একটি বিজ্ঞপ্তিপ্রকাশ করে এনটিপিসি।  জানানো হয়, এই  এমজিআর লাইনটি তাদের মালিকানাধীন ।  তারাই লাইনটির দেখভাল করে। ভারতীয় রেলের আওতাধীন এই রেল লাইনটি নয়। তাই এই দুর্ঘটনার সঙ্গে ভারতীয় রেলের কোনও সম্পর্ক নেই।           

ডেডিকেটেড ট্রেন লাইনে মালগাড়িটি নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন গঙ্গেশ্বর      

এনটিপিসি ফরাক্কায় কয়লা খালি করে বারহাইট এলাকায় তাদের ডেডিকেটেড ট্রেন লাইনে মালগাড়িটি নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন গঙ্গেশ্বর মাল । অভিযোগ, সামনের দিক থেকে আসা অন্য একটি মালগাড়ি তাতে ধাক্কা মারে। তাতেই মৃত্যু হয় গঙ্গেশ্বরের। গঙ্গেশ্বর বাবুর পরিবারের লোকজন ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলের দিকে রওনা দিয়েছেন। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকা জুড়ে। 

খেলনার মতো টুকরো টুকরো হয়ে যায় ইঞ্জিন

দুর্ঘটনায় দুটি মালগাড়ির ইঞ্জিনই খেলনার মতো টুকরো টুকরো হয়ে এধারে-ওধারে ছিটকে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে ইঞ্জিন ও কয়লা বোঝাই বগিতে আগুন ধরে যায়। দমকল গিয়ে আগুন নেভায়। এর জেরে ওই রুটে মালগাড়ি চলাচল ব্যাহত হয়। রেলের মালদা ডিভিশনের সহযোগিতা চায় NTPC । এরপরই রেলের তরফে ক্রেন পাঠানো হয়।