অনির্বাণ বিশ্বাস, বীরভূম: ৬৫ ঘণ্টা ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। কিন্তু ছেলের গ্রেফতারি বিন্দুমাত্র দুুঃখ নেই বলে জানাচ্ছেন ধৃত তৃণমূল বিধায়কের বাবা। বরং ছেলের ভয়ে মুখ খোলার উপায় নেই বলে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন তিনি। পাশাপাশি তাঁর আরও অভিযোগ ছেলে জীবনকৃষ্ণ সাহা মারার হুমকিও দিয়েছেন তাঁকে। 


বিস্ফোরক ধৃত বিধায়কের বাবা: এবিপি আনন্দের মুখোমুখি হয়ে এদিন জীবনকৃষ্ণ সাহার বাবা বলেন, "আমার কিছুই মনে হয়নি। কোনও দুঃখ নেই। যে ক্ষতি করে সে বুঝবে। আমি ওর বিষয়ে ঢুকতে চাই না। ও যে বিধায়ক হয়েছে তাও বলেনি। আমাকে সবসময় অসম্মান করে। ব্যবসায় কোনও সহযোগিতা তো করে না। উপরুন্তু ঝামেলা করে। লোক আসত দেখতাম। আমাকে তো মুখ খোলার উপায় নেই। মারতে চলে আসে। ক্ষমতায় আছে বলে হুমকি দেয়। সাতদিন আগেও মারার হুমকি দিয়েছে। আমি কোনও খোঁজ রাখি না। ১৯৯২ সালে লাইসেন্স করেছি সেই গুদাম ভাঙতে আসছে। আমাকে টিকতে দিত না।''


গতকাল বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ কলকাতার নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে শুরু হয় তোড়জোড়। ২টি গাড়ি করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের নিয়ে মুর্শিদাবাদের উদ্দেশে রওনা দেন সিবিআইয়ের এসপি ও ডিএসপি পদমর্যাদার ২ অফিসার। রাত ২টো ৩৫ মিনিটে বড়ঞার তৃণমূল বিধায়কের বাড়িতে পৌঁছন সিবিআই আধিকারিকরা। এরপরই গ্রেফতার হন জীবনকৃষ্ণ সাহা। সোমবার ভোর সোয়া ৫টা নাগাদ বিধায়ককে নিয়ে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন সিবিআই আধিকারিকরা। হুগলির ত্রিবেণী, ডানকুনি, সাঁতরাগাছি হয়ে দ্বিতীয় হুগলি সেতু ধরে, সকাল ১০টা ৩৬-এ বিধায়ককে নিয়ে কলকাতার নিজাম প্যালেসে ঢোকে সিবিআইয়ের গাড়ি।

তৃণমূল বিধায়কের আন্দির বাড়িতে সিবিআই অভিযান ঘিরে শুক্রবার থেকেই তৈরি হয়েছিল একের পর এক নাটকীয় পরিস্থিতি। অভিযান শুরু হয় শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টায়। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে বিধায়কের বাড়িতে পৌঁছয় সিবিআইয়ের একটি দল। শুরু হয় বিধায়ককে জিজ্ঞাসাবাদ। একইসঙ্গে রঘুনাথগঞ্জে বিধায়কের শ্বশুরবাড়িতেও অভিযান চালান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীনই শুক্রবার বিকেল সোয়া ৫টা নাগাদ তদন্তকারীদের হাত থেকে নিজের দুটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে বাড়ির পুকুরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে জীবনকৃষ্ণের বিরুদ্ধে। ওই দিন রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ জোড়া মোবাইলের সন্ধান পেতে পুকুর থেকে জল তোলার কাজ শুরু হয়। শনিবার বিকেলে বিধায়কের বাড়ির কাছে ঝোপ থেকে উদ্ধার হয় ৫টি ব্যাগভর্তি নথি। যেগুলি নিয়োগ সংক্রান্ত নথি বলে সিবিআই দাবি করেছে। এরপর রবিবার সকালে সাড়ে ৩৮ ঘণ্টা পর, উদ্ধার হয় বিধায়কের একটি মোবাইল।


আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee:সুপ্রিম কোর্টের স্বস্তির মধ্যেই অভিষেককে নোটিস ধরাল সিবিআই