সত্যজিত্‍ বৈদ্য, সুদীপ্ত আচার্য ও অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা : আন্দোলনে বসে থাকলেই চাকরি পাবেন, এমন নয়। এর একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া রয়েছে। আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের (Job Seekers) উদ্দেশে এমনই বার্তা দিলেন খাদ্যমন্ত্রী (Food Minister)। সাদা খাতা জমা দিয়ে ঘুষ দেওয়া, সেটাই কি আসল প্রক্রিয়া ? পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। রাজ্যের মন্ত্রীকে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরাও। 


'অমাবস্যার অন্ধকারে ডুবে' আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীরা-


চারিদিকে আলোর উত্‍সব ! কিন্তু ওদের জীবন এখনও অমাবস্যার অন্ধকারে ডুবে ! ২০১৪’র প্রাইমারি টেট উত্তীর্ণ, আপার প্রাইমারি বা SSC’র নবম থেকে দ্বাদশ--- স্বচ্ছ ও যোগ্যদের নিয়োগের দাবিতে কেউ গাঁধী মূর্তি আবার কেউ মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির নীচে ঠায় বসে ! কারও প্রতিবাদ-আন্দোলনকে ১৫ মিনিটের অপারেশনে তুলে দিয়েছে পুলিশ। এই প্রেক্ষাপটে এবার চাকরিপ্রার্থী আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিলেন খাদ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেতা রথীন ঘোষ। তবে, তা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুললেন চাকরিপ্রার্থীরা !


খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ বলেন, "আমাদের দলের লোকদের এগুলি বোঝাতে হবে। এই উত্তীর্ণ হওয়া টেটের ছেলেরা, সব ছেলেমেয়ে তো ওইভাবে চাকরি পাবেন না। আমি বসে থাকলেই আপনাকে চাকরি দিতে পারব, সেই ব্যবস্থা কিন্তু নেই। তার একটা প্রক্রিয়া আছে। সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আপনি সেই সুযোগটা পাবেন।"


এনিয়ে SSC’র আন্দোলনকারী এক চাকরিপ্রার্থীর প্রশ্ন , "পদ্ধতি কি এটা যে টাকা দিতে হবে তাহলে নিয়োগটা পাব ? না, সাদা খাতা জমা দিতে হবে তাহলে চাকরিটা পাব ? পদ্ধতিটা কী ? ওঁর কাছে পরিষ্কার জবাব চাই। আমরা এটাই জানি, পরীক্ষা দেব, পাস করব, ইন্টারভিউ হবে, চাকরি পাব। মেধাতালিকা প্রকাশ হবে। কিন্তু, সেই পদ্ধতিতে তো চাকরি হয়নি।" 


চাকরিপ্রার্থীরা যেমন রাজ্যের মন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন, তেমনি শাসকদলকে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরাও। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, "ওঁকে বোঝান, প্রক্রিয়াটা আপনারা ভুল করেছেন। প্রক্রিয়া তো অবশ্যই ছিল এবং আছে। সেই প্রক্রিয়ায় আপনারা চুরি করেছেন. চুরির প্রক্রিয়া করে ফেলেছেন। এখন প্রক্রিয়া-বিক্রিয়া করে লাভ নেই। কাজটা করুন।"


সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, "রাস্তায় বসে আন্দোলনে করলে চাকরি পাওয়া যাবে না, কে বলেছেন ? তৃণমূল নেতা ! ওটা প্রথম কথা বলেছেন। দ্বিতীয় কথা ওঁর বলা উচিত ছিল, সাদা খাতা জমা দিয়ে টাকার বিনিময়েই চাকরি হয়। সবার মাথার ওপরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অপার সংসার এখন জেলে। মাথার ওপরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।" 


এদিন ৫৮৮ দিনে পড়ল SLST’র চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন। অন্যদিকে, ২০১৪’র টেট উত্তীর্ণ নট ইনক্লুডেডদের একাংশ ৬৭ দিন ধরে আন্দোলন চালাচ্ছেন। যোগ্যদের নিয়োগের দাবিতে অবস্থানে আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থীরাও।


আরও পড়ুন ; "আমাদের কি কেউ পছন্দ করছেন না ?", পঞ্চায়েত ভোটের আগে 'ভাবমূর্তি-বার্তা' তৃণমূল বিধায়কের