সমীরণ পাল, বনগাঁ : নিয়োগে অনিয়মের (Recruitment Scam) অভিযোগের তালিকায় নাম উঠেছে প্রায় ১৭০০ গ্রুপ ডি কর্মীর (Group D Employee)। তাঁদের অনেকেরই সম্পর্ক আছে শাসক কিংবা বিরোধী পক্ষের সঙ্গে। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় তেমনই এক বিজেপি নেতার নাম এসেছে অনিয়মের তালিকায়। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে চলছে চাপানউতোর। 


এর আগেই দেখা গেছে, এই তালিকায় নাম রয়েছে স্বয়ং তৃণমূল কাউন্সিলর থেকে তৃণমূল বিধায়কের মেয়ে এবং তৃণমূলের পঞ্চায়েত কর্মাধ্যক্ষের ছেলের। অনিয়মের অভিযোগের তালিকায় নাম বেরিয়েছে এমন আরও ২ গ্রুপ ডি কর্মীর হদিশ মিলেছে দুর্গাপুরের বুদবুদে। সূত্রের খবর, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা মিলিয়ে মোট ২৮০ জন গ্রুপ ডি শিক্ষাকর্মীর নাম আছে তালিকায়।


তালিকায় বিজেপি নেতাও


নিয়োগ-দুর্নীতির মামলায় ইতিমধ্যেই আদালতের নির্দেশে অনেক অযোগ্যের চাকরি গেছে। সেই খাঁড়া কি ঝুলছে অনিয়মের অভিযোগের তালিকায় থাকা প্রায় ১৭০০ শিক্ষাকর্মীর ঘাড়েও ? বেআইনিভাবে নিয়োগপত্র পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে - এমন গ্রুপ ডি শিক্ষাকর্মীদের ইতিমধ্যেই হাইকোর্টের নির্দেশের বিষয়টি জানানো হচ্ছে ! সেই তালিকায় যেমন তৃণমূলের নেতা কিংবা তাঁদের ঘনিষ্ঠদের নাম আছে। তেমনই আছে বিজেপি (BJP) শিবিরের লোকও। যেমন উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর (Bongaon) বোয়ালদহ জুনিয়র হাইস্কুলের গ্রুপ ডি কর্মী গোবিন্দ বিশ্বাস। বিজেপি নেতা হিসাবেই এলাকার মানুষ তাঁকে চেনেন। 


পরীক্ষা দিয়েই চাকরি, দাবি অভিযুক্তের


অনিয়মে অভিযুক্ত শিক্ষাকর্মী ও বনগাঁর বিজেপি নেতা গোবিন্দ বিশ্বাস বলেছেন, এ বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না। আমি শুনেছি হাইস্কুল মারফৎ, যে আমার লিস্টে নাম আছে। এটা বিচারাধীন বিষয়। এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না। যদিও তাঁর দাবি, চাকরি, পরীক্ষা দিয়েই পেয়েছি। আর এর বেশি কিছু বলতে চাই না। আমি কোনও মন্তব্য করব না। পাশাপাশি রাজনীতিকে বাইরে রাখার দাবি তুলে তাঁর সংযোজন, দলের সঙ্গে এখানে কোনও সম্পর্ক নেই চাকরির। চাকরির সঙ্গে নেতাগিরির কোনও প্রসঙ্গ আসছে না। কোর্টের বিচারাধীন বিষয়। এ বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না। কোর্ট নিশ্চয়ই সঠিক ডিসিশন নেবে। কোর্টের প্রতি আস্থা আছে। কোর্ট যা ডিসিশন নেবে, আমি মাথা পেতে নেব। 


রাজনৈতিক চাপানউতোর


যথারীতি এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে তরজায় জড়িয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি। বনগাঁর তৃণমূল নেতা লাল্টু বালা বলেছেন, 'গোবিন্দ বিশ্বাস বিজেপির জেলা নেতৃত্ব ছিল, দায়িত্বে ছিল, মণ্ডল সভাপতি ছিল। পাকা বিজেপি। ও কোন জেলায়, বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা কী কলকাতার কোন নেতা, কোন বিজেপির নেতা ধরে চাকরিটা হল, সেটা সবার সামনে আসুক।'


পাল্টা বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক দেবদাস মণ্ডল বলেছেন, 'গোবিন্দ বিশ্বাস বিজেপি করে, এখন কে কোনভাবে ঘুরপথে চাকরি নেবে, তার দায় দল নেবে না। দল তার দায় নেবে না। দল যারা যোগ্য প্রার্থী, তাদের পক্ষে। অযোগ্য যারা, যারা ঘুরপথে চাকরি নিয়েছে, তাদের কখনও দল সমর্থন করে না'।


আরও পড়ুন- 'বন্দে' উদ্বোধন, যোগ 'গঙ্গে'তে, শুক্রবারের মোদি-সফর নিয়ে সাজো সাজো রব, ঝলকে সফরসূচি