সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: স্কুলের নিয়োগে (Recruitment Scam) দুর্নীতির মামলায়, বারবার অভিযোগ উঠেছে, সাদা খাতা জমা দিয়েও, টাকার বিনিময়ে চাকরি পেয়েছেন অনেকে। এই প্রথম, সেই সাদা খাতার একাংশ এবিপি আনন্দর হাতে। সম্প্রতি গাজিয়াবাদ থেকে উদ্ধার করা এইসব OMR শিট হাইকোর্টে জমা দেয় সিবিআই। 


বহু চর্চিত সাদা খাতা! স্কুলের নিয়োগে দুর্নীতি সামনে আসার পর থেকে বারবার চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে একটাই শব্দবন্ধ। সাদা খাতা! আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও যেখানে অনেকে চাকরি পাননি। সেখানে কোনও প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে, সাদা খাতা জমা দিয়েও, স্রেফ মোটা টাকার বিনিময়ে চাকরি পেয়েছেন অনেকে! সেই বহুচর্চিত ‘সাদা খাতা’র একাংশই এবার এবিপি আনন্দর হাতে। এই প্রথম ‘সেই সাদা’ খাতার ছবি এবিপি আনন্দে।


 তদন্তে সম্প্রতি গাজিয়াবাদে যায় সিবিআই: সাদা খাতা আসলে সেই সব OMR শিট, যেখানে একটিও প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়নি। সেইরকমই কয়েকটি OMR শিটের ছবি, আপনারা দেখছেন এবিপি আনন্দর পর্দায়। যেখানে একটিও প্রশ্নের উত্তরে কোনও কালির দাগ অবধি নেই। অথচ, এই প্রার্থীরা স্কুলে চাকরি পেয়েছেন বলে সিবিআই সূত্রে দাবি। নিয়োগ-দুর্নীতির তদন্তে সম্প্রতি গাজিয়াবাদে যায় সিবিআই। 


বাজেয়াপ্ত  OMR শিট: নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ, গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি’র OMR শিট তৈরি ও মূল্যায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার অফিসে হানা দিয়ে হার্ড ডিস্ক ও আসল OMR শিট বাজেয়াপ্ত করেন গোয়েন্দারা। অন্যান্য নথির সঙ্গে সেই OMR শিট হাইকোর্টে জমা দেওয়া হয়। আর তাতেই সামনে এসেছে চোখ কপালে তোলার মতো তথ্য। এবিপি আনন্দর হাতে আসা, এরকম একাধিক OMR শিটে দেখা যাচ্ছে, একের পর এক প্রশ্নের উত্তরের জায়গা ফাঁকা! 


উত্তর দেওয়া তো দূরের কথা, কোথাও কোনও দাগও নেই! অথচ, মারাত্মক বিষয় হল, আদালতে পেশ করা সিবিআইয়ের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, স্কুল সার্ভিস কমিশনের সার্ভারে এঁদেরই কারও প্রাপ্ত নম্বর ৫০, কারও ৫২, কারও ৫৩! মানে খাতা ফাঁকাই রয়েছে গেছে। কিন্তু, গাজিয়াবাদ থেকে কলকাতা আসতে আসতে, নম্বর শূন্য থেকে ৫০ ছাড়িয়ে গেছে! এ যেন জাদু! বা অনেকে বলছেন, কালা জাদু!


সিবিআই সূত্রে দাবি, শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মূলে রয়েছে এই সাদা খাতা, মানে ফাঁকা OMR শিট। কিন্তু, এই সাদা খাতার আড়ালে যে পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতি হয়েছে, তার প্রধান কারিগর কারা? এই মামলায় ধৃত, শিক্ষাব্যবস্থার একদা দণ্ডমুন্ডের কর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তা-ই জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন গোয়েন্দারা।