কলকাতা: বকেয়া ডিএ-র (DA) দাবিতে ধর্মঘটে যোগ দেওয়ায় কলকাতা থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রত্যন্ত এলাকায় বদলি। নবান্নের ৬ কর্মীকেও ডিটেলমেন্ট। এমনই অভিযোগ তুলে সরব হল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। তাঁদের অভিযোগ, ৬ মে মহামিছিলের আগে মনোবল ভেঙে দিতেই এই ব্যবস্থা। যে কোনও স্তরের কর্মীকে সরকার চাইলেই বদলি করতে পারে। এটা সার্ভিস রুলেই রয়েছে। দাবি নবান্ন সূত্রে।


প্রত্যন্ত এলাকায় বদলির অভিযোগ: বকেয়া ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন বাংলার সীমানা ছাড়িয়ে রাজধানীতে পৌঁছে দিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। চলতি মাসে দিল্লির যন্তরমন্তরে দু'দিনের বিক্ষোভ অবস্থান পালন করেছে তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে আগামী ৬ মে মহামিছিলের ডাক দিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। কিন্তু তার আগে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলল সরকারি কর্মচারীদের এই সংগঠন। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের অভিযোগ, শিক্ষক-শিক্ষিকা মিলিয়ে ৫৮০ জন সরকারি কর্মীকে কলকাতা থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা, পাথরপ্রতিমা, সুন্দরবনের মতো প্রত্যন্ত এলাকায় বদলি করে দেওয়া হয়েছে।

যাঁদের বদলি করা হয়েছে, তাঁদের প্রায় ৯০ শতাংশই গত ১০ মার্চ ধর্মঘটে সামিল ছিলেন।পাশাপাশি মঞ্চের দাবি, নবান্নে কর্মরত ৬ জন সরকারি কর্মীকে ডিটেলমেন্ট অর্থাৎ কম গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বদলি করা হয়েছে। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের অভিযোগ, বকেয়া ডিএ নিয়ে তাঁদের আন্দোলনকে মানসিকভাবে ধাক্কা দিতে ইচ্ছাকৃতভাবে এই পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার। যদিও বদলি ইস্যুতে নবান্নের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের যে কোনও স্তরের যে কোনও কর্মচারীকে সরকার চাইলেই বদলি করতে পারে। এটা রাজ্য সরকারি কর্মীদের সার্ভিস রুলেই রয়েছে। তারজন্য সুনির্দিষ্ট কারণ দেখানো হয় না।


চলতি মাসেই নবান্নে  হয় ডিএ-বৈঠক। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ৫, রাজ্য কোঅর্ডিনেশন কমিটির ২ এবং তৃণমূল প্রভাবিত কর্মচারী ফেডারেশনের ২ জন। সবমিলিয়ে বিভিন্ন কর্মী সংগঠনের মোট ৯ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন এই বৈঠকে। রাজ্য সরকারের তরফে বৈঠকে অংশ নেন  মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, স্বরাষ্ট্রসচিব বি পি গোপালিকা এবং অর্থসচিব মনোজ পন্থ। নবান্নে বৈঠক যখন চলছে, তখনও বকেয়া ডিএ নিয়ে সমাধান সূত্র মিলবে বলে আশা করে বসেছিলেন আন্দোলনকারীরা।


সূত্রের খবর, বৈঠকে আন্দোলনকারীদের বক্তব্য শোনার পরে মুখ্যসচিব বলেন, আমরা সহকর্মীদের প্রতি সহানুভূতিশীল। রাজ্য যে পুরস্কার পেয়েছে, তার মূল কারিগর আপনারাই। তখন আন্দোলনকারীরা প্রশ্ন তোলেন, আমরাই যদি কারিগর হই, তাহলে কেন আমাদের জেলে পাঠানো হচ্ছে? আমাদের দূরের জেলায় হয়রানিমূলক পোস্টিং কেন দেওয়া হচ্ছে?  অর্থসচিব বলেন, আমরা বিষয়টি দেখব। এরপর বলা হয়, ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ স্কিম, শিক্ষক-সহ সমস্ত স্তরের কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য হওয়া উচিত। অর্থসচিব বলেন, এটা আমরা সুপারিশ করে দিচ্ছি। বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা ৪২ শতাংশ হারে ডিএ পান। এরাজ্য়ের সরকারি কর্মীরা ডিএ পান ৬ শতাংশ হারে। অর্থাৎ কেন্দ্র এবং রাজ্য়ের মধ্য়ে ডিএ-র ফারাক ৩৬ শতাংশ। সেকথা মনে করিয়েই, মুখ্যসচিবদের উদ্দেশে,আন্দোলনকারীরা বলেন, আপনি তো ৪২ শতাংশ পাচ্ছেন! আর আমরা ৬ শতাংশ!সূত্রের খবর, মুখ্যসচিব বলেন, আমরাও খারাপ লাগে। কর্মচারীদের প্রতি সহাভূতিশীল। তবে আমাদের তহবিল নেই। অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে দিতে পারছি না। সঙ্কট কাটলে নিশ্চয়ই দেব।


আরও পড়ুন: Workout: শরীরচর্চার সময় আচমকাই 'অ্যাজমা অ্যাটাক'! এই সমস্যা এড়াতে কী কী নিয়ম মেনে চলবেন?