দক্ষিণ ২৪ পরগনা: দুই দিন পর অনিশ্চয়তাকে সঙ্গে করে গ্রামে ফিরল নির্যাতিতারা। এদিকে আগুনে পুড়ে ছাই। নেই ছাদ। বাসনপত্র, উনুন সব কিছু ঘরে বাইরে ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। মাথা গোজার ঠাঁইটুকু নেই। 


আতঙ্ককে সঙ্গী নিয়েই তাণ্ডবের ২দিন পরে গ্রামে ঢুকছেন ঘরছাড়ারা। বহিরাগতদের গ্রামে প্রবেশ নয়, জানিয়ে দিল পুলিশ। আশ্রয়হীনদের ঠিকানা এখন দক্ষিণ বারাসাতে সিপিএমের পার্টি অফিস।অবশেষে পুলিশের আশ্বাসে ঘরে ফিরছেন ঘরছাড়ারা।ঘরে ফেরার পর নির্যাতিতারা সাংবাদিকদের জানালেন, কীভাবে এর মধ্যে থাকব, আলো, জল, খাবার কিছুই নেই ! 


ইতিমধ্য়েই জয়নগরকাণ্ডে ৩টি মামলা রুজু করা হয়েছে।পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে দলুয়াখাকি গ্রামের সিপিএম নেতা-সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। পাশাপাশি তৃণমূল নেতা খুনে অভিযুক্তকে পিটিয়ে মারার ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে পুলিশ। অন্য দিকে সিপিএম কর্মী, সমর্থকদের বাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনাতেও পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে। 


 মৃত সইফুদ্দিন লস্কর ছিলেন তৃণমূলের বামনগাছি অঞ্চলের সভাপতি। তাঁর স্ত্রী বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান। পাল্টা এক দুষ্কৃতীকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে।স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার ভোর পৌনে ৫টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা। বাড়ির কাছেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষকৃতীরা। পদ্মেরহাট গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তৃণমূল অঞ্চল সভাপতিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। রাজনৈতিক কারণ? নাকি ব্যক্তিগত শত্রুতা? কী কারণে খুন খতিয়ে দেখছে জয়নগর থানার পুলিশ।


 গোটা ঘটনার পর কড়া প্রতিক্রিয়া বাম-বিজেপি-তৃণমূলের।তৃণমূল নেতা ভাদু শেখ খুনের পর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল বীরভূমের বগটুই গ্রাম। আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয়েছিল শিশু-মহিলা সহ ১০ জনের। ২০২২-এর ২১ মার্চ, বগটুইয়ের সেই ঘটনার সঙ্গে তুলনা করে তৃণমূলকে নিশানা করলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। 'যেকোনও মৃত্যু দুঃখজনক, কিন্তু অন্য কারও ঘাড়ে দোষ চাপাবার কোনও মানে হয় না', বলেছেন তিনি।   অন্তর্দ্বন্দ্বে তৃণমূল নেতা খুন হওয়ায় দুষ্কৃতীদের বাঁচাতে সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের নিশানা করেছে শাসক দল, অভিযোগ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর।


আরও পড়ুন, 'নাবালিকাকে অপহরণের চেষ্টা..', রণক্ষেত্র হাওড়া


গ্রাম ঘিরে আগুন ধরিয়ে প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালানো হয়, কিন্তু তা সত্ত্বেও দমকল দেরিতে ঢুকেছে বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। দমকলের গাড়িই ঢুকতে দেওয়া হয়নি, পাল্টা দাবি দমকল আধিকারিকের।'তৃণমূল নেতা খুনের পর জনরোষেই হামলা', পাল্টা দাবি তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের।বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেছেন,  'তৃণমূল একদমই ঠিক বলেছে। এলাকা দখলের লড়াই। তৃণমূল কংগ্রেসে এই পর্যন্ত যতগুলি খুন হয়েছে, প্রত্যেকটা খুন তৃণমূল -তৃণমূলের লড়াই।' তবে ইতিমধ্য়েই তৃণমূলের তরফে অভিযোগ উঠেছে, এটা বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই খুনের ঘটনার পিছনে রয়েছেন। যদিও এই অভিযোগে জল ঢেলে রাহুল সিনহা বলেছেন, 'যারা দোষ করে, তাঁদেরকে আড়াল করার জন্য, বিজেপির নাম সামনে আনে।'