সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ে (Jadavpur University student death) ছাত্রের রহস্য়মৃত্য়ু। ঘটনায় জোরালো হয়েছে ব়্যাগিংয়ের (Ragging) অভিযোগ। ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতারির দাবিতে, উত্তাল হয়েছে শহর, ভরে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার (social media) দেওয়াল। বিশ্ববিদ্যালয়ে ব়্যাগিং কতটা নৃশংস এ-নিয়ে মুখ খুলেছেন একের পর এক ছাত্র, প্রাক্তনী। এরই মধ্যে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী এবং মেন হস্টেলের প্রভাবশালী দাদা, সৌরভ চোধুরীকে গ্রেফতার করে পুলিশ, তারপরে গ্রেফতার হয় আরও দুজন। যারা যারা, এই ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত, তাদের কড়া শাস্তির দাবি উঠছে দিকে দিকে। প্রশ্ন উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে সিসিটিভি ক্যামেরা না-থাকা নিয়ে। এই মাত্রা-ছাড়া ব়্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিতে সরব হয়েছে মৃতের পরিবার থেকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ও প্রাক্তনীদের একাংশ।
সোমবার এই ঘটনায় হাইকোর্টে দায়ের হল একটি জনস্বার্থ মামলা। মামলাকারীর আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে , R.K. রাঘবনের ( Anti-Ragging Committee ) রিপোর্ট মেনে, প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ে নবাগত পড়ুয়াদের র্যাগিং নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এই বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক UGC। এই মর্মে জনস্বার্থ মামলা দায়েরের অনুমতি চেয়ে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। আবেদন মঞ্জুর করে হাইকোর্ট। চলতি সপ্তাহেই যাদবপুরের পড়ুয়ার মৃত্যু সংক্রান্ত মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
অতীতে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ব়্যাগিং দমন করতে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ দেওয়ার জন্য , সিবিআই-এর প্রাক্তন ডিরেক্টর ডঃ আর কে রাঘবনের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। এই কমিটি ব়্যাগিং বিষয়ে বিশদ গবেষণা চালায় ও জনমত সংগ্রহ করে। তার ভিত্তিতে রাঘবনের কমিটি কয়েকটি সুপারিশ জারি করে। এই পারিশ যথাযথভাবে গৃহীতও হয় হয় সুপ্রিম কোর্টে। তাতে বলা হয়েছিল -
কমিটি দ্বারা তালিকাভুক্ত বিষয়গুলি ছিল:
- র্যাগিং দমনের প্রাথমিক দায়িত্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ।
- র্যাগিং উচ্চ শিক্ষার মানে বিরূপ প্রভাব ফেলে।
- ব়্যাগিং দমন করতে পারার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলির প্রণোদনা পাওয়া দরকার।
- র্যাগিংকে স্কুলের পর্যায় থেকেই মানবিক মূল্যবোধ গড়ে তোলার ব্যর্থতা হিসেবে বিবেচনা করা দরকার। ইত্যাদি
ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় তৎপর হয়েছে রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। রবিবার কমিশনের প্রতিনিধিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখে রীতিমতো উষ্মা প্রকাশ করেন। এরপর তাঁরা ক্যাম্পাসের মধ্যে নিউ বয়েজ হস্টেলেও যান। ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের প্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন :
পড়ুয়ামৃত্যুর নেপথ্যে কি আরও বহু মুখ? ভাইরাল চিঠির হাতের লেখা নিয়ে সন্দিহান বিশ্ববিদ্যালয়েরই আর এক পড়ুয়া