সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: ফের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ (Primary Teacher Recruitment) নিয়ে হুঁশিয়ারির সুর শোনা গেল। এবার সাড়ে ৪২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের প্যানেল বাতিলের হুঁশিয়ারি বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Abhijit Gangopadhyay)। ২০১৬-র নিয়োগপ্রক্রিয়ার পুরো প্যানেল বাতিলের হুঁশিয়ারি দিলেন বিচারপতি। শুধু তাই নয়, তিনি বলেন, ঢাকি সমেত বিসর্জন দিয়ে দেব। যদিও 'ঢাকি' বলতে তিনি কী বোঝাতে চেয়েছেন বা কাকে বোঝাতে চেয়েছেন, সে বিষয়টি পরিষ্কার নয়।                   

  


এদিন বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘যেদিন ২০১৬-র পুরো প্যানেল বাতিল করব, সেদিন ঢাকি সমেত বিসর্জনের মানে বলব। মানিক ভট্টাচার্য পর্যন্ত পৌছনোর ক্ষমতা নেই বলে, চাকরি পায়নি মামলাকারীরা’।                 


আরও পড়ুন, 'এটা কোনও ভূতের কাজ নয়, কমিশনের অফিসে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরাই এই দুর্নীতি করেছেন'


প্রসঙ্গত, ২০১৬-র নিয়োগপ্রক্রিয়ায় চাকরির আবেদন জানিয়ে মামলা করেন ১৪০ জন অপ্রশিক্ষিত প্রার্থী। নম্বর বিভাজনের প্রকাশিত তালিকায় অনেক অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীর সুপারিশপত্র পাওয়ার অভিযোগ করেছেন তাঁরা। মামলাকারীদের আরও বেশ কিছু নথি পেশের নির্দেশ দেন বিচারপতি।  ১৬ ডিসেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানান হয়।                                    


২০১৪’র টেটের পর ২০১৬ সালে নিয়োগের প্রথম প্যানেল প্রকাশ করা হয়। ২০১৭ সালে প্রকাশ পায় নিয়োগের দ্বিতীয় তালিকা। সেখানে ২৬৯ জন প্রার্থীর নাম ছিল। অভিযোগ ওঠে, ফেল করে, এমনকি পরীক্ষা না দিয়েও, ২৬৯ জন প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি পেয়েছেন। অভিযোগের তালিকা ছিল অনেক বড়, নম্বর বাড়ানো ও নতুন প্যানেল প্রকাশের বিষয়ে কেন বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি, সেই প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি। যদিও এর কোনও গ্রহণযোগ্য উত্তর দিতে পারেনি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। এরপরই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, এই নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। 


একইসঙ্গে তিনি নির্দেশ দেন, ২৬৯ জনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হচ্ছে। অবিলম্বে তাঁদের বেতনও বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি তাঁরা যাতে কোনওভাবেই বরখাস্ত হওয়া প্রাথমিক শিক্ষকরা যাতে স্কুলে ঢুকতে না পারে, তারজন্য জেলা স্কুল পরিদর্শককে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। এদিকে, আদালতের এই নির্দেশে আশার আলো দেখছেন চাকরিপ্রার্থী। যাঁরা গত আটবছর ধরে চাকরির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। যদিও চাকরি প্রার্থীদের কথায়, আন্দোলনে হারিয়ে যাওয়া বছরগুলো আর ফিরবে না। কিন্তু, ভবিষ্যৎ কি অতীতের ক্ষতে মলম দেবে? সেই আশা নিয়েই বসে রয়েছেন এরকম বহু চাকরিপ্রার্থী।