কলকাতা: শিক্ষা দফতরকে (Education Department) ৫০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ আদালতের (High Court)। জরিমানার (fine) নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justic Abhijit Ganguly)। ১০ দিনের মধ্যে হাইকোর্টের লিগ্যাল এইড সার্ভিসে টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ। মুখ্যসচিবের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা না থাকলে পদত্যাগ করা উচিত, পর্যবেক্ষণ আদালতের। ৬ সপ্তাহের মধ্যে মুখ্যসচিবকে তদন্ত শেষ করে রিপোর্ট জমা দিতে হবে, বলা হয়েছে এই কথাও।


কোন মামলায় নির্দেশ?
পূর্ব মেদিনীপুরে ২০১২-র hপ্রাথমিকে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বজনপোষণের অভিযোগ ওঠে। স্বজনপোষণের মাধ্যমে কাদের চাকরি হয়েছিল জানতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। ২০১৬ সালে মুখ্যসচিবকে তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। কিন্তু ২০১৬ সালের আদালতের নির্দেশ কার্যকর করেনি বোর্ড। তারপর ফের এই নিয়ে মামলা দায়ের হয় আদালতে। সেই মামলাতেই আজ জরিমানার নির্দেশ দিল আদালত। পরবর্তী শুনানি ১২ সেপ্টেম্বর। প্রসঙ্গত, দিনদশেক আগেই প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডি-র ভূমিকা নিয়ে তীক্ষ্ণ প্রশ্ন করেছিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। জানতে চেয়েছিলেন,  'আপনারা যখন এই দুর্নীতির তদন্তে একটি গ্রহণযোগ্য জায়গায় পৌঁছবেন, তখন এই তদন্তের প্রয়োজনীয়তা আদৌ থাকবে তো?' প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটকে প্রশ্ন করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিন্হা। সঙ্গে আরও জানতে চাইলেন, 'তদন্ত কি অনন্তকাল চলবে?'


কী বলেছিলেন বিচারপতি সিনহা?
সেই সময় বিচারপতি সিনহার পর্যবেক্ষণ ছিল, 'আকাঙ্খিত গতিতে আপনাদের তদন্ত চলছে না।' বস্তুত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত বছর পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর থেকেই নিত্যনতুন তথ্য় সামনে আসতে থাকে। দুর্নীতির জাল যে অনেক গভীরে ছড়ানো, সে ছবিটা স্পষ্ট হতে শুরু করে ধীরে ধীরে। বিচারপতি সিনহাকে দিনদশেক আগেকার সেই শুনানিতে সিবিআই জানিয়েছিল, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেলে বন্দি কুন্তল ঘোষের সেলের কাছে তৃতীয় ব্যক্তির উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। তবে কুন্তলের  তরফে যে অভিযোগ আনা হয়েছিল তা মিথ্যা, সে কথাও ফের আদালতে জানিয়েছে সিবিআই-ইডি। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট সঙ্গে বক্তব্য, কুন্তল ঘোষের ওপর কোনও শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন করা হয়নি। সিবিআই-ইডির দাবি, কুন্তলের অভিযোগ মিথ্যা, চিকিৎসক, পরিবার এবং আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া গিয়েছে। সিবিআইয়ের যুক্তি, নির্যাতন সম্পর্কে বিভিন্ন ব্যক্তিদের মধ্যে বক্তব্যের অসঙ্গতিও রয়েছে। সিবিআইকে বিচারপতি সিন্হা এও বলেছিলেন, 'টাকা দিয়ে চাকরি কিনেছেন কারা? খুঁজে বের করুক সিবিআই।' আগামী ২৯ শে আগস্টের মধ্যে পরবর্তী রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেওয়া হয় দুই কেন্দ্রীয় সংস্থাকে। বিচারপতি সিনহা ইডি-সিবিআইয়ের কাছে তদন্তে অগ্রগতির বিষয়টি জানতে চেয়েছিলেন। ইডি রিপোর্ট পেশ করে বলে, 'কুন্তল ঘোষ, অয়ন শীল ও শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে ১৫ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়েছে। কুন্তল ঘোষ, অয়ন শীল ও শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৪৩ টি স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে, অভিযুক্ত ও তাদের পরিজনদের নামে এই সম্পত্তি রয়েছে।' সঙ্গে আরও জানানো হয়, নিয়োগ দুর্নীতিতে এখনও পর্যন্ত ১২৬.৭ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। ১০০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এই মুহূর্তে ইডির নজরদারিতে রয়েছে বলে দাবি ইডির। তাদের ধারণা, দুর্নীতির অঙ্ক সাড়ে তিনশো কোটি টাকা পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে। ইডি-র আরও বক্তব্য, বাংলা চলচ্চিত্র জগতেও এই টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। সম্প্রতি ১৯টি জায়গায় একযোগে তল্লাশি চালানো হয়। সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ও পরিবারের নামে সম্পত্তি রয়েছে। তদন্তও চলছে।


আরও পড়ুন:স্কুল জীবনে বাবার মৃত্যু, সাইকেল সারিয়ে প্রথম আয়! হার না মানা জেদের জোরেই এখন IAS