সৌভিক মজুমদার, অর্ণব মুখোপাধ্য়ায় ও কৃষেন্দু অধিকারী, কলকাতা : সম্পত্তি-বিবাদ মামলায় প্রভাব খাটানোর অভিযোগে বিচারপতি অমৃতা সিন্হার (Justice Amrita Sinha) স্বামী আইনজীবী প্রতাপচন্দ্র দে-কে ফের তলব করেছে CID। এ নিয়ে এই মামলায় তৃতীয়বার ডাকা হয়েছে বিচারপতির স্বামীকে। এবার জমা দিতে বলা হয়েছে মোবাইল ফোনও। আর এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে, আইনজীবী ও রাজনৈতিক মহলে। 


জমি-বাড়ি সংক্রান্ত বিবাদ মামলায় প্রভাব খাটানোর মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের তির আবার খোদ বিচারপতির স্বামীর বিরুদ্ধে। কাঠগড়ায় কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি অমৃতা সিনহার স্বামী এবং আইনজীবী প্রতাপচন্দ্র দে। শুক্রবার ফের যাঁকে ভবানী ভবনে তলব করেছে ED। আর এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। শুধু বিরোধীই নয়, প্রতিহিংসার অভিযোগে সরব হয়েছেন আইনজীবীদের একাংশও। 


আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের আক্রমণ, 'কহি পে নিগাহে, কহি পে নিশানা।' প্রসঙ্গত, গত ১২ ডিসেম্বর প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টে রুজিরা ও অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের সম্পত্তির প্রসঙ্গ ওঠে। যে মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে ২০ ডিসেম্বর অর্থাৎ বুধবার। ১২ নভেম্বর বিচারপতি অমৃতা সিন্হা, আয়ের উৎস দেখা হয়েছে কিনা, ED-র উদ্দেশে প্রশ্ন করেন। বিচারপতি সিন্হা বলেছিলেন, আপনাদের কি মনে হয় না, যে এই নথির মধ্যে থাকা সম্পত্তি যদি এই সময়ের মধ্যে হস্তান্তর করে দেওয়া হয় বা বিক্রি করে দেওয়া হয় তাহলে কি হবে ? আপনারা কার কার পিছনে ছুটবেন ?


আইনজীবী নীলাঞ্জন ভট্টাচার্য-র যে প্রসঙ্গ তুলে আক্রমণ 'CID তদন্তের কি প্রয়োজন সেটা নিয়ে প্রশ্ন আছে। বিচারপতি সিনহার এজলাসে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলা আছে। সেটা প্রভাবিত করার চেষ্টা হচ্ছে কিনা দেখা দরকার।'


২২ ডিসেম্বর অর্থাৎ শুক্রবার বেলা ১১টায় ভবানী ভবনে আইনজীবী প্রতাপচন্দ্র দে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে CID-র তরফে। ঘটনাচক্রে, বর্তমানে বিচারপতি অমৃতা সিংহের এজলাসে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি চলছে। এই প্রেক্ষাপটে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন আইনজীবী বিক্রম বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তিনি বলেছেন, তদন্তের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ না অন্য বিষয়ে করা হচ্ছে কি ? কোন সময়ে ডাকা হয়েছে ? ২০ তারিখের আগে কেন ডাকা হচ্ছে। এরকম কিছু হয়, আইনের চোখে পুলিশ অফিসাররাও বাদ যাবেন না।


১ ডিসেম্বর, ১৬ ডিসেম্বরের পর এবার ২২ ডিসেম্বর, একমাসের মধ্যে মধ্যে আইনজীবী প্রতাপচন্দ্র দে-কে CID-র তিনবার ডেকে পাঠানো প্রসঙ্গে তৃণমূলকে নিশানা করেছে বিজেপি, সিপিএম। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কটাক্ষ, 'স্টেট স্পনসর্ড টেরোরিজম। বিচারপতির পরিবারকেও ছাড়া হচ্ছে না। আমি সুপ্রিম কোর্টকে বলব এটা দেখতে'। আর সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, 'দেখে বোঝাই যাচ্ছে কণ্ঠস্বর রুদ্ধ করার চেষ্টা। চাপে রাখার চেষ্টা।' পাল্টা তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষের দাবি, ' অমিতাভ লালা বাংলা ছেড়ে পালা। বিচারপতিদের নিয়ে তো মিছিল করেছিল সিপিএম। কোনও বিচারপতি দলীয় রাজনীতি থেকে বেরোতে পারছেন না। আইনজীবীরা তো পেশাদার। যিনি বলছেন ঠিক বলছেন না। ইডি-সিবিআই যখন হয়, উইশ লিস্ট আছে কিছু।'


আরও পড়ুন- রাম গড়লেন 'রহিম', অযোধ্যায় বসছে বাংলার জামালউদ্দিনের গড়া মূর্তি


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে