কলকাতা: 'কলকাতা (Kolkata) বা বিধাননগরে (Bidhannagar) হুক্কা বার বন্ধ নয়' নির্দেশ দিলেন বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা। 'হুক্কা বার বন্ধ কেন? রাজ্য চাইলে আলাদা আইন করতে পারে। কিন্তু পুলিশ এভাবে বন্ধ করতে পারে না'। শুনানিতে বিচারপতির মন্তব্য, 'হুক্কা শুধু ধূমপানের একটি অঙ্গ। কলকাতা বা বিধাননগর পুরসভার অধিকার নেই হুক্কা বার বন্ধ করার। মেয়র কেন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন?


এ বিষয়ে বিচারপতির নির্দেশ, 'হুক্কায় কোথাও কিছু মেশানো হচ্ছে কিনা অনুসন্ধান করুন। কিন্তু পুরসভার অথরিটি নেই বন্ধ করার। নিকোটিনও হার্বাল হলে আপত্তি কোথায়? নারকোটিক হলে সমস্যা হবার কথা। রেস্তোরাঁয় হুক্কার জায়গা  আলাদা হয়। পাবলিক প্লেস হলে তখন ধূমপানে আপত্তি আনা যায়'।


এ দিন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার আরও প্রশ্ন  'আলাদা করে ট্রেড লাইসেন্স নেওয়া আছে হুক্কা বারের জন্য। সিগারেট থেকে একটা বিরাট অর্থ রাজ্যের কোষাগারে যায়। নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবনা না থাকলে রাজ্যের রাজস্ব আসার পথ আটকানো হচ্ছে কেন?'


এই মামলায় পুলিশ কমিশনার রিপোর্ট পেশ করেছে আদালতে। টোবাকো আইন ভাঙলেই মামলা হচ্ছে। ২২ টোবাকো অ্যাক্ট অনুযায়ী ১৭টি মামলা হয়েছে। আদালতে জমা দেওয়া পুলিশ কমিশনারের রিপোর্টে তার উল্লেখ রয়েছে।


গত ২ ডিসেম্বর শহরের সমস্ত হুক্কা বার বন্ধ করার নির্দেশ দেল কলকাতা পুরসভা (Kolkata Municipal Corporation)। কলকাতা পুরসভার (Kolkata Municipal Corporation) মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) জানান, ‘হুক্কা বারের আড়ালে নিষিদ্ধ মাদকের ব্যবহারের অভিযোগ আসছে। মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে তরুণ প্রজন্ম’। সেই কারণে হুক্কা বার বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, জানান মেয়র। 


ইদানিং বেশকিছু রেস্তোঁরায় হুক্কা বারের রমরমা শুরু হয়েছে। তবে সেই লাইসেন্স শীঘ্রই বাতিল করে দেওয়ার ইঙ্গিত দেন মেয়র। কিছুুদিনের মধ্যেই পুরসভার তরফে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে জানানো হয়। এর পরই পুলিশ এবং পুরসভার যৌথ উদ্যোগে শুরু হয় অভিযান।


কী বললেন মেয়র: শুক্রবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) বলেন, 'রেস্তোঁরায় রেস্তোঁরায় হুক্কা বার রয়েছে। সেখানে হুক্কায় এক প্রকার রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার হচ্ছে। যা স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক। হুক্কা বারের আড়ালে নিষিদ্ধ মাদকের ব্যবহারের অভিযোগ আসছে। তরুণ প্রজন্ম মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে। এই ব্যবসা মানুষের ক্ষতি করছেট। এদিন ফিরহাদ হাকিম জানান, আর কোনও রেস্তোঁরাকে হুক্কাবার চালানোর লাইসেন্স দেওয়া হবে না। ইতিমধ্যেই যাদের দেওয়া রয়েছে, সেগুলিও বাতিল করে দেওয়া হবে বলে। এদিন মেয়র আরও জানিয়েছেন, 'পুলিশকে বিষয়টি দেখতে বলব। যাঁরা চালাচ্ছেন, তাঁদের অনুরোধ করব, আপনারা এটি বন্ধ রাখুন।’


এরপরেই শুরু হয় অভিযান। বেআইনি হুক্কা বার (Hookah Bar) চালানোর অভিযোগে টালা (Tala) ও পার্ক স্ট্রিট (Park Street) থেকে ৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই দুই জায়গায় পুলিশ অভিযান চালায়। দু’জায়গা থেকেই বেশ কিছু সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। 










পুরসভার সিদ্ধান্ত: শহরের সব হুক্কাবার বন্ধ করার কলকাতা পুরসভার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন মেয়র। এই প্রেক্ষাপটে রাতেই শহরের ২ জায়গায় হুক্কা বারের বিরুদ্ধে অভিযান চালাল পুলিশ। টালা থেকে গ্রেফতার করা হল একজন, পার্ক স্ট্রিট থেকে দু’জনকে।  









শুক্রবার টালা থানা এলাকার বিধান সরণিতে একটি রেস্তোরাঁর নীচে হুক্কা বার চালানোর অভিযোগে হানা দেয় পুলিশ। এখান থেকে গ্রেফতার করা হয় একজনকে। পার্ক স্ট্রিটের মুজফফর আহমেদ স্ট্রিটে হুক্কা বার চালানোর অভিযোগে ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রেই হুক্কা বারের আড়ালে নেশার আসর বসানো হয়। সে কারণেই হুক্কা বার বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় কলকাতা পুরসভা।