সৌভিক মজুমদার, প্রকাশ সিনহা, সুকান্ত মুখোপাধ্যায় ও ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : ৪৫ মিনিটের টানটান বিচারপর্ব। যার মাঝে পরতে পরতে ঘটল ঘটনার ঘটঘটা। যুক্তি-পাল্টা যুক্তির পরে রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে (Jyotipriyo Mullick) আগামী ৫ নভেম্বর পর্যন্ত ইডি হেফজাতের (ED Custody) নির্দেশ দিল ব্যাঙ্কশাল আদালত। আর বিচারক তনুময় কর্মকারের যে নির্দেশ শুনে আদালতেই অজ্ঞান হয়ে পড়লেন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী ও বর্তমান বনমন্ত্রী।
যারপরই আদালতে এজলাসের মধ্যেই মন্ত্রীর মাথায় জল ঢালতে দেখা যায় মন্ত্রীর মেয়েকে। যার পরই বিচারকের বাতানুকূল চেম্বারে নিয়ে যাওয়া হয় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। কিছুক্ষণ পরই ব্যাঙ্কশাল কোর্টে পৌঁছয় কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) অ্যাম্বুল্যান্স। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এখনও সেখানেই বসে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হলে সেক্ষেত্রে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন খোদ বিচারপতি।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করবে কমান্ড হাসপাতাল, নির্দেশ আদালতের (Court)। বাড়ির খাবার পাবেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, নির্দেশ বিচারকের। পাশাপাশি দিনে এক ঘণ্টা করে আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, নির্দেশ বিচারকের। যারপরই ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। যারপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন জ্যোতিপ্রিয়। তাঁর আইনজীবীর দাবি, মুখ দিয়ে গেঁজা উঠেছে জ্যোতিপ্রিয়র।
এদিকে, জোকা ইএসআইয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর আদালতে পেশ করা হয় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। যেখানে ইডির (Enforcement Directorate) তরফে দাবি করা হয়, রেশন দুর্নীতিতে যুক্ত রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী। জিজ্ঞাসাবাদের অসহযোগিতা করার অভিযোগ এনে তাঁর থেকে তদন্তের প্রয়োজনে একাধিক তথ্য পেতে হেফাজতে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এজেন্সি (Central Investigating Agency)।
পাল্টা সুগার আক্রান্ত জ্যোতিপ্রিয় জেরা-জিজ্ঞাসাবাদ-গ্রেফতারি পর্বের মাঝে ইনসুলিন নিতে না পারার কথা জানান তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতার আইনজীবী। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের পা ফুলে থাকা সহ অসুস্থতার কথা জানিয়ে দাবি করেন জামিনের। এর মাঝেই ব্যাঙ্কশাল আদালতে চলতে থাকা শুনানি পর্বে সোজা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে দেন বিচারপতি। জানতে চান, তাঁকে কি শারীরিকভাবে কেউ অত্যাচার করেছে ?
বিচারকের যে প্রশ্নের উত্তরে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, না। পাশাপাশি তিনি উল্লেখ করেন, ইডি-র আধিকারিকরা এখনও পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে ভাল ব্যবহারই করেছেন। যদিও কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাতে গ্রেফতারি প্রসঙ্গে অবশ্য জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, তাঁর বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ শানান।