প্রদ্যোৎ সরকার, নদিয়া: নদিয়ার কালীগঞ্জে সিপিএম কর্মীদের মারধর, পরিবারের সদস্যদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। ২ সিপিএম সমর্থককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ভোট-হিংসায় ৯ বছরের বালিকার মৃত্যুতে আন্দোলন করায় এই চক্রান্ত বলে আক্রান্তদের অভিযোগ। মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় নদিয়ার পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে নিহত ছাত্রীর পরিবার।
২৩ জুন, কালীগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন অকালে ঝরে গিয়েছে ছোট্ট প্রাণটা। তৃণমূলের বিজয়োল্লাস থেকে ছোড়া বোমায় নিহত হয় মোলান্দি গ্রামের ৯ বছরের তামান্না খাতুন। রীতিমতো টার্গেট করে বোমা ছোড়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তামান্নার মা। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীর পরিবার সিপিএম সমর্থক। একমাসের মাথায়, মঙ্গলবার রাতে ওই মোলান্দি গ্রামেই হানা দেয় পুলিশ। অভিযোগ, পাঁচিল টপকে বাড়িতে ঢুকে ২ সিপিএম সমর্থককে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারির কারণ জানতে চাওয়ায় মারধর, মহিলাদের শ্লীলতাহানিও করা হয় বলে অভিযোগ।
আক্রান্তদের অভিযোগ, তামান্না খাতুনের মৃত্যুতে ন্যায়বিচারের দাবিতে সরব হওয়ায় তাঁদের টার্গেট করা হয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে এদিন নদিয়ার পুলিশ সুপার অমরনাথ কে-র সঙ্গে দেখা করেন নিহত তামান্না খাতুনের মা-বাবা। মেয়ের খুনে অভিযুক্তদের না ধরে সাক্ষীদের হেনস্থা করছে পুলিশ, অভিযোগ করে নিহত ছাত্রীর পরিবার। ভোট-হিংসায় নিহত তামান্না খাতুনের মা সাবিনা ইয়াসমিন শেখ বলেন, "আমার মেয়ের খুনিদের ধরার নাম নেই। যারা আমাদের সাহায্য করছে, ওদের হুমকি দিচ্ছে পলাশির বড়বাবু মহিলাদের অত্যাচার করছে। তামান্নার আব্বু পরিযায়ী শ্রমিক। ওঁর উপরেও যে অত্যাচার হয়েছে, ওঁকে কেন বাইরে যেতে হবে? বাংলাতে কেন কাজ পাওয়া যাবে না? উনি বাংলা ছেড়ে বাইরে কেন যাবেন, ওখানে মার খেতে কেন যাবেন? এখানে নিরাপত্তা নেই, সেখানেও নিরাপত্তা নেই। পুলিশ বেছে বেছে তাদের সমর্থকদের হেনস্থা করছে বলে অভিযোগ করেছে সিপিএম।পুলিশের দাবি, মারধরের ঘটনা ঘটেনি। তামান্না খাতুনের খুনের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত আনোয়ার শেখের ভাগ্নিকে কোপানোর অভিযোগে ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দেবাশিস আচার্য বলেন, "তামান্নার মা আগেই SP-কে বলেছিলেন সাক্ষীদের হুমকি দেওয়া হবে। মুখ বন্ধ করার চেষ্টা হবে। সেই আশঙ্কা সত্যি হল। পুলিশ চাইছে চাপের রাজনীতি করা।''