আবির দত্ত ও প্রদ্যোৎ সরকার, কালীগঞ্জ : কালীগঞ্জের ভোট-হিংসায় বালিকাকে খুনের ঘটনায় ধৃত মূল অভিযুক্ত গাওয়াল শেখ, তার দুই ছেলে-সহ ৪। গ্রেফতারের সংখ্যা বেড়ে ৯। ৫ দিন পরেও অধরা ১৫। এফআইআর- এ নাম রয়েছে মোট ২৪ জনের। কালীগঞ্জের উপনির্বাচনে হিংসায় ছোট্ট তামান্নার খুনের ঘটনায়, FIR-এ এক নম্বরে নাম থাকা মূল অভিযুক্ত গাওয়াল শেখ ও তাঁর ছেলে-সহ আরও চারজনকে অবশেষে গ্রেফতার করল পুলিশ। বাকি ১৫ জন কবে ধরা পড়বে? আর কতদিন সময় লাগবে? বিভিন্ন মহলে উঠছে নানা প্রশ্ন।
চোখের সামনে ৯ বছরের মেয়ের শরীর বোমায় ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে। জঘন্য, ঘৃণ্য এই ঘটনায় দোষীদের নজিরবিহীন শাস্তি চাইছেন মা। এমন শাস্তি, যা দেখে দ্বিতীয়বার এই অপরাধ করার আগে যেন ভয়ে বুক কেঁপে ওঠে অপরাধীদের। সোমবার, কালীগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে ভোট গণনা শেষ হওয়ার আগেই সিপিএম সমর্থকদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বোমার আঘাতে প্রাণ যায় ৯ বছরের তামান্নার। প্রথমে কয়েকজনকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও অধরা ছিলেন মূল অভিযুক্ত গাওয়াল শেখ ও তাঁর পরিবারের লোকজন। শেষমেশ ধরা পড়ল তাঁরা। বাবা-ছেলেকে গ্রেফতারির আগে, শনিবার রাতে FIR-এ নাম থাকা নবাব শেখ ও হাবিবুল শেখকে মুর্শিদাবাদ থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারপর তাদের দু'জনকে জেরা করেই গাওয়াল শেখ ও তার ছেলে বিমলেের হদিশ মেলে।
ধৃত গাওয়াল শেখ তৃণমূলের বুথ সভাপতি। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার ভোর রাতে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া থেকে বাবা-ছেলেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কালীগঞ্জের ঘটনায়, এর আগেই অভিযুক্তদের কারও কারও বাড়ির ওপর তৃণমূলের পতাকা উড়ছে। এমনকী ধৃতদের বাড়ি থেকে শুক্রবার তাজা বোমাও উদ্ধার করেছে পুলিশ। এবার গ্রেফতার হলেন গাওয়াল শেখ ও তাঁর ছেলে। গয়া পালিয়ে গিয়ে গা ঢাকা দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। নিহত তামান্নার মায়ের অভিযোগ, ঘটনার দিন তৃণমূলের বুথ সভাপতি এই গাওয়াল শেখই বোমা মারার নির্দেশ দিয়েছিল। যদিও ধৃত গাওয়াল শেখের দাবি তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে।
ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের পর আজ নিহত তামান্নার বাড়িতে গেলেন মহম্মদ সেলিম, মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়রা। সিপিএম নেতাদের সামনে প্রাণনাশের আশঙ্কার কথা বলেন তামান্নার মা সাবিনা ইয়াসমিন। এদিন এলাকায় একটি সভাও করে সিপিএম। এ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।