ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা: আর জি করকাণ্ডের পর পেরিয়ে গিয়েছে ১০ টি মাস। এখনও মানুষের মনে ঘা দগদগে। এরই মধ্যে  শহরে ঘটে গেল আরও একটি ভয়ঙ্কর ঘটনা!  দক্ষিণ কলকাতার ল’কলেজের মধ্যেই ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল।  কসবা থানা থেকে অনতিদূরে কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যেই গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল। আবার প্রশ্নের মুখে পড়ল শহরের নারী নিরাপত্তা। গত ২৫ জুন সন্ধেয় এই ঘটনা ঘটে। তারপর অভিযোগকারিণী পুলিশের দ্বারস্থ হন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার হয় তিন জন। 

এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে কলেজে সন্ধেবেলা প্রাক্তন ছাত্রের উপস্থিতি নিয়ে। কীভাবে সন্ধের সময় কলেজে থেকে গেলেন ছাত্ররা। কীভাবেই বা কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ল গণধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ওই প্রাক্তনী। কী তার পরিচয়। ছাত্রীর অভিযোগ, ইউনিয়ন রুমের সংলগ্ন একটি ঘরে জোর করে একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে এই ঘটনা ঘটায় মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র। যিনি এখন আলিপুর আদালতে প্র্যাকটিশ করেন, প্রাক্তন টিএমসিপি নেতা, রাজ্যের শাসক দলের বিশেষ ঘনিষ্ঠ। পড়ুয়ামহলে বেশ প্রভাব প্রতিপত্তি। অভিযোগকারিণীর দাবি, মনোজিতকে সাহায্য করেন ২ জন ছাত্র।  তারাই ঘরের বাইরে গার্ড দিচ্ছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি ।

সেদিন  কী ঘটেছিল? পুলিশকে অভিযোগকারিণী জানিয়েছেন, বকলমে এই ল' কলেজের TMCP প্রধান মনোজিৎই। কলেজের গার্লস বিভাগের GS করে দেওয়ার কথা বলে ডাকে মনোজিৎ। তাঁকে বলা হয়, 'তুমি কতটা অনুগত, আজ তার পরীক্ষা নেওয়া হবে'। এরপর সন্ধে ৬.১০ নাগাদ অভিযোগকারিণীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় মনোজিৎ মিশ্র। অভিযোগকারিণীর দাবি তিনি জানিয়ে দেন, তাঁর প্রেমিক আছে। এরপর বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় চড়াও হয় মনোজিৎ। বেরোনোর সময় বাধা দেওয়া হয় তাঁকে। তারপরেই জোর করে  কলেজের একটি বাথরুমের সংলগ্ন একটি ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। দুজন অভিযুক্ত ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দেয়। বন্ধ করে ছিল অভিযুক্ত মনোজিত ও ওই ছাত্রী। ওই সময় তাঁর নির্যাতন শুরু করেন মনোজিত । তাঁর চিৎকার শুনে ছুটে আসে কলেজের নিরাপত্তারক্ষী। কিন্তু কলেজের নিরাপত্তারক্ষীকেও মারধর করে বের করে দেয় মনোজিতের দলবল। ঘটনার সময় ভিডিও-ও তুলে রাখা হয়। কাউকে জানালে ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল করে দেওয়া হবে বলে ভয়ও দেখানো হয় ! অভিযোগ ওই ছাত্রীর।  গোটা ঘটনা সন্ধে সাড়ে ৭ টা থেকে রাত ১০ টার মধ্যে হয়েছে বলে অভিযোগ। 

ছাত্রীর অভিযোগ অনুসারে, তিন জনের মোবাইলই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।