শ্রীরামপুর: হাওড়া পুরসভা থেকে বালিকে আলাদা করার বিল (Howrah Municipal Corporation Amendment Bill) নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল সঙ্ঘাত বেড়েই চলেছে। রাজ্যের দেওয়া তথ্যে অসঙ্গতি রয়েছে বলে নতুন করে অভিযোগ তুলেছেন জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar)। অন্য দিকে, সাংবিধানিক পদে আসীন থাকা সত্ত্বেও তিনি বিজেপি-র পদলেহন করে চলেছেন বলে পাল্টা অভিযোগ তুললেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)। 


শনিবার নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র থেকে ধনখড়ের উদ্দেশে আক্রমণে শাণ দেন কল্যাণ। বলেন, "বিজেপি-র পদলেহন করছেন রাজ্যপাল। খুব ভাল করেই জানেন যে ভোট হলে বিজেপি-র উইকেট পড়ে যাবে। তাই অসাংবিধানিক ভাবে হাওড়া পুরসভা বিল আটকে রেখেছেন। কোন অধিকারে বিল আটকে রেখেছেন? কীসের অধিকারে বিল আটকে রেখেছেন এত দিন ধরে? প্রতি মুহূর্তে সংবিধান লঙ্ঘন করে চলেছেন।"


এ দিন রাজ্যপালকে ভোটের ময়দানেও আহ্বান জানান কল্যাণ। তিনি বলেন, "শ্রীরামপুরে আসুন। এখান থেকে ভোটে দাঁড়িয়ে দেখান। আড়াই লক্ষের বেশি ভোটে হারিয়ে ফেরত পাঠিয়ে দেব।"


কিন্তু কল্যাণ রাজ্যপালকে নিয়ে রাজনীতি করছেন বলে পাল্টা অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। দলের নেতা রাহুল সিনহা বলেন, "রাজ্যপাল সাংবিধানিক পদে রয়েছেন। সেই পদ নিয়ে রাজনীতি করতে চাইছে তৃণমূল। রাজ্য সরকার যদি সত্যিই হাওড়ায় পুরভোট করাতে চান, তাহেল রাজ্যপাল যে যে বিন্দু তুলে ধরেছেন, সেগুলো পরিষ্কার করে দিলেই মিটে যায়! তা না করে হাওড়াকে রাজনৈতিক ইস্যু হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা চলছে।"


আরও পড়ুন: Howrah Bill: 'প্রায় এক মাস বিলম্বের পর তথ্য পাঠিয়েছে সরকার', হাওড়া পুরবিল নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতে নতুন মোড়


হাওড়া পুরসভা বিল নিয়ে শনিবার রাজ্যকে নিশানা করেন ধনখড়ও। এ নিয়ে সরাসরি অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলতে চান বলে টুইটারে লেখেন তিনি। অভিযোগ করেন, এক মাস দেরি করে গত ২০ ডিসেম্বর তাঁকে ওই বিল পাঠায় রাজ্য। তাতে যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে, তার কোনও সারবত্তা নেই। এ ব্যাপারে সরাসরি অ্যাডভোকেট জেনারেলের সঙ্গেই কথা বলতে চান তিনি। তিনি দার্জিলিংয়ে রয়েছেন। সেখানেই অ্যাডভোকেট জেনারেলকে দিয়ে যাবতীয় নথি পাঠাতে হবে। 



গত নভেম্বর মাসে রাজ্য বিধানসভায় হাওড়া-বালি পুরসভা বিভাজন প্রস্তাব পাশ হয়ে যায়। পরে বালিকে (Bally) বাদ দিয়ে, হাওড়াকে পৃথক পুরসভা (Howrah Municipl Corporation) করতে সংশোধনী বিল পাশ করানো হয়। তার পর সেটি পাঠানো হয় রাজ্যপালে স্বাক্ষরের জন্য। কিন্তু রাজ্যপাল অভিযোগ করেন, বিলটি নিয়ে কিছু প্রশ্ন রয়েছে তাঁর। রাজ্যকে তা জানিয়েছিলেন তিনি। তা সত্ত্বেও রাজ্যের তরফে ব্যাখ্যা মেলেনি।



এর পর ওই বিল কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court) পৌঁছয়। বিল পাশ না হওয়া পর্যন্ত হাওড়ায় পুরভোট সম্ভব নয় বলে জানানো হয়। কিন্তু অ্যাডভোকেট জেনারেল সম্প্রতি রাজ্যপাল বিলটিতে সই করে দিয়েছেন বলাতে রাজনৈতিক তরজা চরমে ওঠে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) বিষয়টি নিয়ে সরব হন। পরে যদিও ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে বলে আদালতে স্বীকার করেন অ্যাডভোকেট জেনারেল।