বিশ্বজিৎ দাস, পশ্চিম মেদিনীপুর: সাড়ে তিন মাস টানাপড়েনের পর অবশেষে খড়গপুর পুরসভার ( Kharagpur Municipality ) প্রধান হলেন কল্যাণী ঘোষ (Kalyani Ghosh)। আজ দুপুরে পুর কাউন্সিলরদের সামনেই পুরপ্রধান (Chairman) পদের জন্য কল্যাণী ঘোষের নাম প্রস্তাব করেন জেলা তৃণমূল কংগ্রেস কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি। পুরপ্রধান হওয়ার পর কল্যাণী ঘোষ বলেন, 'দল আমাকে চেয়ারম্যান পদে ঘোষণা করেছেন। আগামী দিনে সকল কাউন্সিলর ও নেতৃত্বকে নিয়ে একসঙ্গে মিলে কাজ করব।'
প্রেক্ষাপট...
২০২২ সালের ২১শে ডিসেম্বর দলের নির্দেশে পুরপ্রধান পদ থেকে ইস্তফা দেন প্রদীপ সরকার। এদিন পুরপ্রধান ঘোষণা করার পর 'অজিত মাইতি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় , অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের নির্দেশে খড়গপুর পুরসভার চেয়ারম্যান কল্যাণী ঘোষের নাম আজ সকল কাউন্সিলরদের সামনে ঘোষণা করা হল।' প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বরে প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকারের বিরুদ্ধে সমাজবিরোধীদের দিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ করেছিলেন তাঁর দল, তৃণমূলেরই ১৫ জন কাউন্সিলর।
কী হয়েছিল?
দলের ২৫ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১৮ জন কাউন্সিলর চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকারের কাজকর্ম ও ব্যবহারে বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে সরাসরি দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে লিখেছিলেন। বিষয়টি নিয়ে নিজেদের মধ্যে একের পর এক বৈঠকও সেরেছেন। এমনকি, যে দিন অভিযোগ জমা পড়ল সেদিন দুপুরে নিজেদের সিদ্ধান্ত বা অভিযোগ জানাতে ১৮ জন কাউন্সিলর-ই সশরীরে পৌঁছে গিয়েছিলেন মেদিনীপুরে জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা 'র অফিসে। আর, এরপরই, প্রদীপের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জমা পড়ে খড়্গপুর টাউন থানায়। প্রসঙ্গত, পৌর প্রধানের উপর ক্ষুব্ধ খড়গপুর পৌরসভার একুশ জন তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর। খড়গপুর পৌরসভায়২৫ জন তৃণমূল কাউন্সিলরের মধ্যে ২১ জন কাউন্সিলর পৌর প্রধান প্রদীপ সরকারের উপর ক্ষুব্ধ। তাঁরা পৌর প্রধানকে সরানোর আর্জি নিয়ে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি পাঠান বলে জানিয়েছেন ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্সের সিআইসি সি.এইচ বিষ্ণু প্রসাদ। তিনি প্রাক্তন পৌর প্রধানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে বলেছিলেন 'তৃণমূল কংগ্রেসের ২১ জন কাউন্সিলর একসাথে মিলে বলছে চেয়ারম্যান রেজিগনেশন দিয়ে ওই জায়গায় নতুন কেউ চেয়ারম্যান হলে ভাল হয়। চেয়ারম্যান আমাদের সঙ্গে কোঅপারেশন করছে না, তাহলে কাজ কী করে হবে ? আমাদের একটা সমস্যার জন্য দশ বার বলতে হয় ওনাকে। উনি বলেন হবে। ওয়ার্ডে কোন কাজ না হওয়ার জন্য। আমরা সবাই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিযোগ জানিয়েছি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। অন্য কেউ চেয়ারম্যান হলে ভাল হয়। এই চেয়ারম্যান আমাদের চাই না।' সেই প্রদীপ সরকারের জায়গাতেই এবার নতুন কাউন্সিলর এলেন।
আরও পড়ুন:আইসক্রিম দুনিয়ায় আসছে রিলায়েন্স! প্রতিযোগিতার মুখে আমূল-মাদার ডেয়ারি