কলকাতা : গত ১৭ জুন । বালেশ্বরের স্মৃতি ফিরিয়ে দেয় শিলিগুড়ির ফাঁসিদেওয়ায় ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা। শিয়ালদাগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় বহু মৃত্যু সামনে আসার পর রেল সরাসরি জানিয়ে দেয়, তাদের ভুল নয়, বরং মালগাড়ি চালকের ভুলেই ঘটেছিল দুর্ঘটনাষ প্রায় এক মাস পর এবার সামনে আসছে একদম আলাদা তথ্য, যা কার্যত আঙুল তুলছে রেলের দিকেই।  


কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি যৈ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, তাতে বলা হয়েছে, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা ঘটেছে ট্রেন পরিচালন ব্যবস্থার গলদে। কারণ, ট্রেন চালকদের দেওয়ার জন্য যথেষ্ট সংখ্যক মেমো ছিল না। রিপোর্টে উল্লেখ, ওই সেকশনে ট্রেন চালানোর জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়নি চালকদের। এমনকী দুর্ভাগ্যের বিষয় যোগাযোগ রাখার জন্য ওয়াকি টকির মতো গুরুত্বপূর্ণ ডিভাইস পর্যন্ত ছিল না চালকদের কাছে। কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি রিপোর্টে দাবি, ওই সেকশনে ট্রেনের স্পিড লিমিট নির্দিষ্ট করা বলা ছিল না। 

গতমাসের ১৭ তারিখ,  কাটিহার ডিভিশনের রাঙাপানি ও চটের হাট স্টেশনের মাঝে, কাঞ্জনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে পিছন থেকে ধাক্কা মারে একই লাইনে দ্রুত গতিতে থাকা  মালগাড়ি। দুর্ঘটনায় মালগাড়ির চালক সহ ১০ জনের মৃত্যু হয়। আর এই দুর্ঘটনার পরই, রেল বোর্ডের তরফে দাবি করা হয় 'মালগাড়ির চালকের ভুলেই ঘটে দুর্ঘটনা।  ট্রেন এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ঠিক হয়নি। কিন্তু মনে হচ্ছে যে, ট্রেন উনি থামাননি। সিগন্যাল ছিল থামানোর জন্য। তা সত্ত্বেও ট্রেন এগিয়ে গেছে। পিছনের ট্রেনের থেমে যাওয়া উচিত ছিল।' 


কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটির রিপোর্টে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। দুর্ঘটনার আগে মালগাড়ির চালক ও কাঞ্জনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের চালককে ইস্যু করা হয়েছিল TA 912 মেমো। আর কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, যত গণ্ডগোলের সূত্রপাত TA 912 মেমো ইস্যু করাতেই। 
TA 912-এর জায়গায় ইস্যু করা উচিত ছিল TD 912। কারণ TA 912 মেমোয় ট্রেনের গতির কোনও উল্লেখ থাকে না, যা উল্লেখ থাকে TD 912 মেমোয়।
ঠিক এই কারণেই দুর্ঘটনার দিন, সিগন্যালিং সিস্টেম খারাপ থাকার পরও ধীর গতিতে এগোচ্ছিলেন না মালগাড়ির চালক। কারণ তাঁকে TD 912 মেমোই ইস্যু করা হয়নি। সিগন্যাল ফেলিওয়ের পর থেকে দুর্ঘটনার আগে পর্যন্ত, ওই রুটে ম্যানুয়াল সিগন্যালিংয়ে ক্রস করে মোট ৭ টি ট্রেন। যার মধ্যে শুধুমাত্র কাঞ্জনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ছাড়া, কোনও ট্রেনই ১৫ কিলোমিটার গতিতে এগোনোর নিয়ম মানেনি। আর এই ভুলেই ঘটে গেল এত বড় দুর্ঘটনা। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে