কলকাতা: কসবা গণধর্ষণকাণ্ডে তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্ট তলব করল হাইকোর্ট। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে রিপোর্ট দেবে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি, কেস ডায়েরি তলব করা হয়েছে পুলিশের কাছে। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী সপ্তাহের বৃহস্পতিবার।
সাউথ ক্যালকাটা ল' কলেজে ছাত্রী-ধর্ষণের অভিযোগের মামলায় একাধিক প্রশ্ন তুলে রাজ্য সরকার ও কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে হলফনামা তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্ট জানতে চেয়েছে, জনস্বার্থ মামলাগুলিতে যে সব অনিয়ম ও অবৈধ কাজের অভিযোগ করা হয়েছে, তার প্রেক্ষিতে সরকার বা কলেজ কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ করেছে? এনিয়ে সরকার ও কলেজ কী ভাবছে? পাশাপাশি, পুলিশকে বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, ১০ জুলাই, বৃহস্পতিবারের মধ্যে জমা দিতে হবে কেস ডায়েরি।
কসবার আইন কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্রীকে গণধর্ষণের মতো ভয়ঙ্কর অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে রাজ্যে। এনিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র বেঞ্চে দায়ের হয়েছে ৩টি জনস্বার্থ মামলা। একাধিক প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নজরদারিতে তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন মামলাকারীরা।কলেজের একজন প্রাক্তনী কিভাবে কলেজে প্রবেশাধিকার পান? কলেজের সময়সীমা শেষ হওয়ার পরেও কেন তাঁরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন? কলেজে অনধিকার প্রবেশ আটকাতে কী ব্যবস্থা আছে? আগে অভিযোগ জানানো হলেও কেন কলেজ এবং পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেনি? CCTV বা অন্য নজরদারি ব্যবস্থায় কেন খামতি ছিল? মামলাকারীদের আবেদনের যে প্যারাগ্রাফে এই সব প্রশ্ন তোলা হয়, সেই প্যারাগ্রাফের উল্লখ করে এদিন আদালত বলে, কসবাকাণ্ডে তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে আদালতে। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে রিপোর্ট দেবে রাজ্য। মামলায় নির্দিষ্ট করে যে সব অভিযোগ করা হয়েছে তার প্রেক্ষিতে আলাদা আলাদা করে হলফনামা দিতে হবে রাজ্য এবং কলেজ কর্তৃপক্ষকে। বৃহস্পতিবারের মধ্যেই পুলিশকে কেস ডায়েরি জমা দিতে হবে আদালতে। মামলাকারীদের অভিযোগ, একাধিক কলেজে প্রায় প্রতিদিন আসছেন কিছু প্রাক্তনী। কলেজ কীভাবে চলবে, ছাত্রছাত্রীরা কীভাবে চলবেন তা নির্ধারণ করে দিচ্ছেন তাঁরা। ইউনিয়ন রুমকে অবৈধ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। পড়াশোনা করার জন্য আসা জুনিয়রদের ওপর অত্যাচার চালানো হচ্ছে। প্রাক্তনীরা এতটাই প্রভাবশালী যে ভয়ে কার্যত সিঁটিয়ে থাকে কলেজ কর্তৃপক্ষ। ওই প্রাক্তনীদের সঙ্গে কলেজের কর্মীদের একাংশের যোগ রয়েছে। আদালত এদিন জানিয়েছে, তদন্তের অগ্রগতি রিপোর্টের পাশাপাশি, কার কার গোপন জবনাবন্দি নেওয়া হয়েছে, গোপন জবানবন্দিতে তাঁরা কী বলেছেন, সব কিছু খতিয়ে দেখবে আদালত। তারপর দেওয়া হবে প্রয়োজনীয় নির্দেশ। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী সপ্তাহের বৃহস্পতিবার।