কলকাতা: কীভাবে নিয়োগ হয়েছিল মনোজিৎ মিশ্রর? এবার পুলিশের স্ক্যানারে নিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় নথি। ইতিমধ্যেই নিয়োগসংক্রান্ত সমস্ত নথি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। অ্যাটেনডেন্সের জন্য নির্দিষ্ট রেজিস্টারও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কলেজে মনোজিতের আসা-যাওয়ার তথ্য পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। 

Continues below advertisement

কসবা গণধর্ষণকাণ্ডে লালবাজারের একটি সাউথ ক্যালকাটা ল’ কলেজের গভর্নিং বডির রেজিস্টার বাজেয়াপ্ত করে। এর পাশাপাশি অ্যাটেনডেন্সের জন্য নির্দিষ্ট রেজিস্টারও বাজেয়াপ্ত করেছেন পুলিশ আধিকারিকরা। তদন্তকারীরা বলছেন যে অনেক জায়গা থেকে শোনা যাচ্ছে মনোজিৎ এতটাই প্রভাবশালী ছিল যে নিয়মিত সইও করত না। মনোজিৎ আদৌ রোজ সই করত কিনা নাকি প্রভাব খাটিয়ে সই করত না, সেটাও খতিয়ে দেখা হবে। এই সব তথ্য জানার জন্য ওই রেজিস্টার গুরুত্বপূর্ণ। গভর্নিং বডি মনোজিতকে নিয়োগ করেছে। সাউথ ক্যালকাটা ল’ কলেজের অফিসে নিয়োগ সংক্রান্ত যে নথি রয়েছে, সেসবও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এই নথি পরীক্ষা করলেই পুলিশ আধিকারিকরা জানতে পারবেন, এই নথি ৪৫ দিন অন্তর অন্তর যে পুনর্নবীকরণ যে হয়, সেটা কার মাধ্যমে হয়। কারা তাতে সই করেন। একইসঙ্গে মনোজিৎ মিশ্রের নিয়োগের পেছনেও বা কে রয়েছেন তাও উঠে আসতে পারে তদন্তে।  

কসবা গণধর্ষণকাণ্ডে মনোজিৎ মিশ্র সহ ৪ অভিযুক্তকে নিয়ে ল' কলেজে পুনর্নির্মাণ করল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। আজ ভোর ৪টে নাগাদ চার অভিযুক্তকে নিয়ে কলেজে যান তদন্তকারীরা। কলেজের বিভিন্ন অংশে চলে পুনর্নির্মাণ। ইউনিয়ন রুম, গার্ড রুম থেকে শৌচালয়, সব জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয় ৪ অভিযুক্তকে। নির্যাতিতার অভিযোগ অনুযায়ী পর পর ঘটনাক্রম মিলিয়ে দেখেন তদন্তকারীরা। পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকরা ছিলেন কলেজে। ৪ অভিযুক্তকে বের করে নিয়ে যাওয়ার পরে কলেজের বিভিন্ন অংশে থ্রিডি ম্যাপিং করেন তদন্তকারীরা। ইউনিয়ন রুম, গার্ড রুমের থ্রিডি ম্যাপিং করা হয়। ক্রাইম সিনের ডিটেল মডেল তৈরি করতে এই থ্রিডি ম্যাপিং ব্যবহার করা হয়। কোনও প্রমাণ যাতে চোখ না এড়ায়, সেইজন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করেন তদন্তকারীরা। ঘটনাস্থলের ৩৬০ ডিগ্রির ছবি ধরা পড়ে থ্রিডি ম্যাপিংয়ে। ঘটনাস্থলের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে থ্রিডি ম্যাপিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফটোগ্রামেট্রি টেকনোলজি ব্যবহার করা হচ্ছে এই স্ক্যানারে। 

Continues below advertisement

২৫ তারিখ কসবায় কলেজের মধ্যে ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগে মনোজিৎ মিশ্র ছাড়াও জেব আহমেদ ও প্রমিত মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপরে নিরাপত্তারক্ষী পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়কেও গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার দিন সন্ধে ৭টা ৩০ থেকে থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কী কী ঘটেছিল? পুরো ঘটনার পুনর্নির্মাণ করেন তদন্তকারীরা। নির্যাতিতার এফআইআরের সঙ্গে গোটা বিষয়টি মিলিয়ে দেখা হয়। বয়ান মিলিয়ে দেখতে গত শনিবার সন্ধে সাড়ে আটটা নাগাদ নির্যাতিতাকে কলেজে নিয়ে আসে পুলিশ। আজ অভিযুক্তদের নিয়ে এই মামলায় প্রথমবার পুনর্নির্মাণ করা হয় কলেজে।৪ ঘণ্টা ২০ মিনিট পরে অভিযুক্তদের নিয়ে বেরিয়ে যান তদন্তকারীরা। আজ আলিপুর আদালতে তোলা হবে নিরাপত্তারক্ষী পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়কে।