কলকাতা: কসবাকাণ্ডে নির্যাতিতা FIR-এ ঘটনার দিনের যে পুঙ্খানুুপুঙ্খ বিবরণ দিয়েছিলেন, তার সঙ্গে পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণের হুবহু মিল পাচ্ছে পুলিশ। সূত্রের খবর, যে ভিডিও তোলা হয়েছিল নির্যাতিতাকে ব্ল্য়াকমেল করতে, সেই ভিডিওই এখন হয়ে উঠছে অভিযুক্তদের অপরাধ প্রমাণে প্রধান হাতিয়ার। পুলিশ সূত্রে দাবি, নির্যাতিতার বয়ানের সঙ্গে হুবহু মিলে গেছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজও।
সাউথ ক্য়ালকাটা ল' কলেজে আইনের ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগে ধৃত মূল অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী মনোজিৎ মিশ্র ও দুই পড়ুয়া প্রমিত মুখোপাধ্য়ায় ও জেব আহমেদের বিরুদ্ধে।নির্যাতিতা তরুণী অভিযোগপত্রে লিখেছিলেন, তারা জোর করে আমাকে গার্ডের ঘরে নিয়ে যায়। 'J' আমাকে ধর্ষণ করে। আমি বাধা দিলে, সে আমাকে ব্ল্য়াকমেল করে, হুমকি দেয়, যা সে আগে থেকেই করে আসছিল। সে আমাকে হুমকি দেয়, আমার বয়ফ্রেন্ডকে খুন করে দেবে, আমার মা-বাবাকে গ্রেফতার করিয়ে দেবে। তাও আমি বাধা দিই। তখন সে আমার দু'টো আপত্তিকর ভিডিও দেখায়, যেগুলো আমাকে ধর্ষণের সময় তোলা। পুলিশ সূত্রে খবর, দেড় মিনিটের সেই ফুটেজ পাওয়া গেছে মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রর মোবাইল ফোন থেকেই। যেখানে তরুণীকে নির্যাতনের প্রমাণ মিলেছে বলে সূত্রের খবর। শুধুমাত্র ফুটেজই নয়, নির্মম অত্যাচারের বড় সাক্ষী হয়ে উঠেছে ঘটনাস্থলের আশেপাশে থাকা একাধিক সিসিটিভিও। কলেজের মেন গেটে ঢোকার মুখেই পিলারের গায়ে লাগানো রয়েছে এই CC ক্যামেরা। নির্যাতিতার অভিযোগ ছিল, ঘটনার সময় ইউনিয়ন রুমের বাইরে পাহারায় ছিলেন দুই আইন পড়ুয়া প্রমিত মুখোপাধ্যায় ও জেব আহমেদ। পুলিশ সূত্রে দাবি, নির্যাতিতার বয়ানের সঙ্গে হুবহু মিলে গেছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। বুধবার, কলেজের সিসি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, মেন গেটের দিকে আসছিলেন নির্যাতিতা। সেখান থেকে তাঁকে হাত ধরে ভিতরে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন ২ জন। এরপর অভিযোগকারিণীকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় গার্ডরুমের দিকে। ওই ২ জন হল সাউথ কলকাতা ল' কলেজেরই দুই পড়ুয়া প্রমিত মুখোপাধ্যায় ও জেব আহমেদ। পুলিশ সূত্রে দাবি, CC ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পড়েছে, ইউনিয়ন রুমের দরজার সামনে ২ আইন পড়ুয়া প্রমিত ও জেবের উপস্থিতি। এছাড়াও কলেজের CC ক্যামেরার ফুটেজে ইউনিয়ন রুমের বাইরে এবং লনের মধ্যে নিরাপত্তারক্ষীর ঘোরাঘুরির প্রমাণ মিলেছে। এছাড়াও কলেজের আরও একাধিক সিসি ক্য়ামেরাও পুলিশের নজরে রয়েছে। এই ঘটনায় আরও সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য একটি তালিকা তৈরি করেছে পুলিশ। ঘটনার দিন বিকেল ৪ টের পর কলেজে কারা ছিল? ছুটির পরও তাঁরা কেন কলেজে ছিল? তাঁরা কিছু দেখেছিল কিনা? এই সবই জানতে চায় পুলিশ।