ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা : কসবাকাণ্ডে মঙ্গলবারই আদালতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একের পর এক অকাট্য প্রমাণ দাখিল করেছেন সরকারি আইনজীবী। এরপরও পুলিশের তদন্তে উঠে আসছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। ঘটনার পরের দিন গ্রেফতারির একঘণ্টা আগে বালিগঞ্জ স্টেশনের কাছে ফার্ন রোড একজনের সঙ্গে দেখা করেন অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র ও জেব আহমেদ। গত ২৫ জুন সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের মধ্যেই ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়, মূল অভিযুক্ত, প্রাক্তন TMCP নেতা ও এবং কলেজের অস্থায়ী কর্মী মনোজিৎ মিশ্রকে (৩১) । গ্রেফতার করা হয় কলেজের বর্তমান দুই ছাত্র প্রমিত মুখোপাধ্যায় (২০) এবং জেব আহমেদকেও (১৯)। পরে গ্রেফতার করা হয় আইন কলেজের নিরাপত্তারক্ষী পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। 

বুধবার আরও এক তথ্য সামনে আসে পুলিশের হাতে। ঘটনার পরের দিন গ্রেফতারির একঘণ্টা আগে বালিগঞ্জ স্টেশনের কাছে ফার্ন রোডে একজনের সঙ্গে দেখা করেন অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র ও জেব আহমেদ। ওই ব্যক্তি কে? কী কারণে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন গণধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্তরা? খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সূত্রের খবর, দু’জনের মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন পরীক্ষা করে জানা গেছে, ঘটনার পরের দিন অর্থাৎ ২৬ জুন, সন্ধে ৬টা ২৫-এ ফার্ন রোডে কারও সঙ্গে দেখা করেছিলেন মনোজিৎ ও জেব। এর একঘণ্টা পর, সন্ধে ৭টা ২০ মিনিটে বোসপুকুরের তালবাগান এলাকা থেকে মনোজিতকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৭টা ৩৫-এ ওই এলাকা থেকেই গ্রেফতার হন আরেক অভিযুক্ত জেব। ইতিমধ্যেই পুলিশের একাধিক প্রমাণের সঙ্গে হুবহু মিলে গিয়েছে নির্যাতিতার বয়ান। এখন খতিয়ে দেখার এই ঘটনা ঘটানোর পর কি কাউকে ধরে আইনের চোখকে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন মনোজিৎ? এর আগেও বহুবার মনোজিতের বিরুদ্ধে  নানা অভিযোগ ওঠে। তখন পুলিশকে জানিয়েও লাভ হয়নি বলেই অভিযোগ অনেকেরই। 

ইতিমধ্যেই পুলিশ আদালতে যে নথি জমা করেছে, তাতে মনোজিৎ মিশ্রকে প্রভাবশালী তকমা দেওয়া হয়েছে। কসবা গণধর্ষণকাণ্ডে মনোজিতদের বিরুদ্ধে যুক্ত করা হয়েছে অপহরণের ধারাও। মঙ্গলবার  গতকাল আলিপুর আদালতে আরও ধারা যুক্ত করার আবেদন জানায় পুলিশ। আদালত আবেদন মঞ্জুর করলে যুক্ত করা হয় ৬টি নতুন ধারা। এর মধ্যে ৩টি ধারা জামিন অযোগ্য, সব মিলিয়ে কসবাকাণ্ডে মোট ৯টি ধারা যোগ হল। পাশাপাশি, আদালতে জমা দেওয়া নথিতে মনোজিতকে প্রভাবশালী বলে উল্লেখ করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, অভিযুক্তরা পরস্পরবিরোধী বয়ান দিয়ে তদন্তকে ভুল পথে চালিত করার চেষ্টা করছে।