কলকাতা: 'ডেঙ্গি (Dengue) আগেও হয়েছে, পরেও হবে। কারণ আমরা যেখানে থাকি, সেই জায়গাটা ডেঙ্গিপ্রবণ', রাজ্যে ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্তের প্রেক্ষিতে বঙ্গ বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের (Sukanata Majumdar) তীব্র সমালোচনার মুখে জবাব মন্ত্রী ও কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim)। সঙ্গে পাল্টা আক্রমণ, 'এটা আসলে চটকা রাজনীতি যেটা বিজেপি করে।' রবিবারই ফিরহাদ হাকিমকে 'ডেঙ্গি হাকিম' বলে কটাক্ষ করেছেন সুকান্ক মজুমদার। তার পর এই প্রতিক্রিয়া ফিরহাদের।


কী পরিস্থিতি?
বর্ষার মরসুমে রাজ্যে ফের চোখরাঙানি দেখাতে শুরু করেছে ডেঙ্গি। চলতি সপ্তাহে বাংলায় ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ৬৭৫ জন। জুলাই মাসে রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্য়া বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮। সরকারি সূত্রের খবর, ১৯ জুলাই থেকে ২৬ জুলাই, এই ৭ দিনেই শুধুমাত্র কলকাতা পুরসভা এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ৪০ জন। কলকাতা লাগোয়া লবণ-হ্রদের হাওয়া-বাতাসেও ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্তের ইঙ্গিত। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯ জুলাই থেকে ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে বিধাননগর পুরসভা ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ২৭। পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর পুরসভা এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্ত ১৯ জন। কলকাতা পুরসভার তথ্য অনুযায়ী, শহরে অন্তত ৫ হাজার বাড়িতে নোটিস পাঠানো হয়েছে। মামলা করা হয়েছে ৯০টি। ন্যাশনাল লাইব্রেরি এবং কোল ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধেও মামলা করেছে কলকাতা পুরসভা। ৫টি ক্ষেত্রে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার অঙ্ক ১ থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। নদিয়ার রানাঘাট পুরসভা এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৬। এছাড়াও উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাত পুরসভা এলাকায় ১১ এবং হাওড়া পুরসভা এলাকায় ৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে ডেঙ্গি মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগে সরব হন সুকান্ত মজুমদার। রবিবার মানিকতলায় ডেঙ্গি মোকাবিলায় কর্মসূচিতে অংশ নেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। সেখান থেকেই তাঁর আক্রমণ, 'ফিরহাদ হাকিম এখন ডেঙ্গি হাকিম হয়ে গিয়েছেন। ওঁকে ডেঙ্গি হাকিম বলে ডাকুন।' সঙ্গে আরও অভিযোগ, এখন কর্পোরেশন কাজ করছে না। 


কড়া প্রতিক্রিয়া ফিরহাদের...
জবাবে কলকাতা পুরসভার মেয়র বলেন, 'পাগলে কিনা বলে, ছাগলে কিনা খায়। এগুলো নাটক। বিজেপি পায়ের তলায় মাটি পাচ্ছে না কারণ সুকান্ত মজুমদারের মতো নাট্যকাররা বিজেপির সংগঠনে রয়েছেন। এসব নাটকে করে ছবি তুলে লাভ নেই। মানুষের সেবা করুন।... একটা ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর ক্ষমতা আছে? নেই। কলকাতায় যে কোনও একটা কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে দেখান!' আর ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত দিয়ে তাঁর স্পষ্ট জবাব, 'ডেঙ্গি আগেও হয়েছে, পরেও হবে। কারণ আমরা যেখানে থাকি সেটা ডেঙ্গিপ্রবণ।' মোটের উপর রোগ মোকাবিলা ঘিরে তুঙ্গে শাসক-বিরোধী তরজা।


আরও পড়ুন:বর্ষায় আবারও ডেঙ্গির প্রকোপ, এক শয্যায় দুই রোগী, ভিড় বাড়ছে জেলার হাসপাতালগুলিতেও