কলকাতা: দুর্গাপুজোয় উত্‍সবের ব্যস্ততায় পরিশ্রান্ত বাঙালি৷ তবু, উদ্‍যাপনে ভাঁটা পড়েনি৷ আজ বাংলার ঘরে ঘরে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। ধন-সম্পদের দেবীকে তুষ্ট করতে জোরকদমে তোড়জোড়৷ দুর্দশার মেঘ কাটিয়ে মা লক্ষ্মী কি মুখ তুলে চাইবেন? আগুন বাজার৷ সাধারণের মুখ ভার৷ তারই মাঝে শঙ্খধ্বনি, আলপনায় আন্তরিকতা৷ রীতি মেনে আরাধনা৷ 


কোজাগরী শব্দের অর্থ কে জেগে আছে? রাতে ধনদেবীর আরাধনা করাই চিরাচরিত রীতি৷ গৃহিণীরা নিজেরাই এই পুজো করতে পারেন৷ দেবী লক্ষ্মীর আরাধনায় শ্বেতপদ্ম ও শ্বেতচন্দন বিশেষ প্রয়োজন। ফল-মূলের পাশাপাশি চিড়ে নারকেল ছাড়া লক্ষ্মীপুজো ভাবাই যায় না। একে বলে চিপিটক৷ লক্ষ্মীর আরাধনা শেষে সারারাত জেগে পাশা খেলার রীতিও বহুল প্রচলিত। সবার একটাই প্রার্থনা, এসো মা লক্ষ্মী, বোসো ঘরে...।


এদিকে, গতকাল কলকাতার রেড রোডে হয়ে গেল দুর্গাপুজো ২০২২-এর কার্নিভাল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ছিলেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্য়সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলও রয়েছেন। এ ছাড়াও টলিউডের ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূলের বিধায়ক অদিতি মুন্সি, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ চক্রবর্তী, ঋত্বিকারা। তাতে শনিবার বিকেলে শহরের বুকে কার্যতই রঙের খেলা শুরু হল। 


এ দিন চলন্ত বাইকে সপরিবারে দুর্গা। বাইকে সওয়ার হয়েই ঢাক-ঘণ্টা বাজিয়ে আরাধনা। কলকাতা পুলিশের ডেয়ার ডেভিল বাহিনীর স্টান্টে মেগা কার্নিভালের সূচনা (Kolkata Police)।  তার দুই পাশে দর্শকাসন। মন্দিরের আদলে তৈরি করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর বসার মঞ্চ। আমন্ত্রিত বিদেশি অতিথিরাও। কড়া নিরাপত্তায় রেড রোড। বিভিন্ন রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণ। কার্নিভালে কড়া নিরাপত্তারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। 


গতকাল, বিকেল সাড়ে ৪টে থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত কার্নিভাল চলল। তার জন্য বেশকিছু রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এর মধ্যে ছিল উত্তরমুখী হসপিটাল রোড, খিদিরপুর রোড, রেড রোড, ক্যুইন্স ওয়ে ও পশ্চিমমুখী মেয়ো রোড। বিকল্প রাস্তা হিসেবে খোলা থাকবে জওহরলাল নেহরু রোড, এসপি মুখার্জি রোড, আশুতোষ মুখার্জি রোড, ডি এল খান রোড-সহ বেশ কিছু রাস্তা। 


দুর্গাপুজো মিটে গেলেও, শহরে এখনও উত্‍সবের রেশ রয়েছে। তাতে অন্য মাত্রা যোগ করল এই পুজো কার্নিভাল। দুর্গাপুজোর ইউনেস্কোর হেরিটেজ স্বীকৃতি প্রাপ্তির পর রেড রোডে প্রথম কার্নিভাল। অংশগ্রহণে ৯৫টি পুজো। বিভিন্ন রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ছিল পুলিশ কন্ট্রোল টাওয়ার। কার্নিভালে এবার অংশ নিয়েছিল ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ের নাচের স্কুল দীক্ষামঞ্জরীর ছাত্রীরা। কার্নিভালে দেখা গেল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের পাড়ার ক্লাব বড়িশা প্লেয়ার্স কর্নারের প্রতিমাও।