কলকাতা : রবিবার কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো ৷ বাংলার ঘরে ঘরে ধনদেবীর আরাধনার প্রস্তুতি তুঙ্গে ৷ সাধারণ গৃহস্থ থেকে সেলিব্রিটি, সবার ঘরেই সাড়ম্বরে লক্ষ্মী বন্দনা হয়। দুর্গাপুজো করলে এই পুজো করতেই হয় সেই স্থানে। দিনে নয়, রীতি অনুযায়ী কোজাগরী পূর্ণিমায় মা লক্ষ্মী পুজো নেন রাতে ৷
রাতে আকাশে যখন উঁকি দেবে পূর্ণিমার চাঁদ, ঘরে ঘরে তখন বাজাতে হবে শাঁখ। সাধ্যমতো করতে হবে সমৃদ্ধির দেবীর পুজো। ‘কঃ জাগর’ শুনতে রাত জাগতে হবে। বিশ্বাস, পূর্ণিমার চাঁদের আলোয় যখন উদ্ভাসিত চরাচর, তখনই মা লক্ষ্মী পা রাখবেন মর্ত্যের মাটিতে। বিত্তশালী হবে ধরা!
‘কঃ’ মানে কে, ‘জাগর’ শব্দের অর্থ জেগে আছ
এই পুজোয় মহিলাদেরই অগ্রাধিকার৷ সন্ধ্যায় পুজো করে সারারাত জেগে থাকাই কোজাগরী-রীতি। ‘কোজাগরী’ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত ‘কঃ জাগর’ শব্দবন্ধ থেকে। ‘কঃ’ মানে কে, ‘জাগর’ শব্দের অর্থ জেগে আছ। অর্থাৎ, কে জেগে আছ? মানুষের বিশ্বাস, এদিন রাতে স্বর্গ থেকে মর্ত্যে নেমে আসেন দেবী৷ যে ভক্ত রাত জেগে তাঁর আরাধনা করেন, তাঁকে আশীর্বাদ করে যান তিনি ৷ তাঁকেই ধনসম্পত্তিতে ভরিয়ে দেন মা লক্ষ্মী। গৃহিণীরা নিজেরাই এই পুজো করতে পারেন৷ শ্বেতপদ্ম ও শ্বেতচন্দনে লক্ষ্মীর আরাধনা করতে হয়৷ ফল-মূলের পাশাপাশি চিড়ে এবং নারকেল লক্ষ্মীপুজোয় আবশ্যিক ৷ একে চিপিটক বলে৷ রীতি অনুযায়ী, পুজো শেষে সারারাত পাশা খেলতে হয় ৷
প্রথা মেনে বহু বাড়িতেই মূর্তির বদলে দেবীর আরাধনা হয় সরায় আঁকা পটে ৷ বিশেষ রীতি মেনে, সরায় লক্ষ্মীর মূর্তি ছাড়াও আঁকতে হয় ঝাঁপি, আয়না, চিরুনির ছবি৷
কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর দিনে মনে রাখুন :
- গৃহিণীরা নিজেরাই এই পুজো করতে পারেন৷
- শ্বেতপদ্ম ও শ্বেতচন্দনে লক্ষ্মীর আরাধনা করতে হয়৷
- ফল-মূলের পাশাপাশি চিড়ে এবং নারকেল লক্ষ্মীপুজোয় আবশ্যিক৷
- পুজো শেষে সারারাত পাশা খেলতে হয়৷
- রাত জেগে পাশা খেলা এই পুজোর রীতি।
- যে ঘরে আলো জলে সেখানেই মা লক্ষ্মী পা রাখেন বলেই বিশ্বাস।
- যাঁরা আজ পুজো করছেন, তাঁরা খেয়াল রাখুন আতপ চাল অবশ্যই কিনবেন।
- মা লক্ষ্মীর ঘটের সামনে কড়ি রেখে পুজো করবেন।
- দোরে দোরে মা লক্ষ্মীর পায়ের আলপনা দেবেন অবশ্যই। আল্পনায় আঁকা হবে লক্ষ্মীর পদচিহ্ন।
- লক্ষ্মী দেবীর ১০৮ নাম জপ করুন অবশ্যই শুভফল পাবেন
- কোজাগরী পূর্ণিমার দিন লক্ষ্মী পাঁচালি পড়তেই হবে।