কলকাতা: আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু কলেজে এবার পোশাকে শৃঙ্খলার ফতোয়া। 'ছেঁড়া জিন্স বা অশালীন পোশাক পরব না' লিখে ভর্তির আগে মুচলেকা দিতে হচ্ছে ছাত্রছাত্রী এবং তাঁদের অভিভাবকদের (College Dress Code)। কলকাতার মিন্টো পার্কের আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস কলেজ থেকে এমন ঘটনা সামনে এসেছে। পোশাক নিয়ে ফতোয়া জারি এবং মুচলেকা আদায়কে ঘিরে কাঠগড়ায় কলেজ কর্তৃপক্ষ।  সাবালক পড়ুয়াদের ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন। তবে বিতর্কের মধ্যেও অনড় অবস্থা কলেজের অধ্যক্ষের। তাঁর বক্তব্য, "ওই সব স্বাধীনতা কলেজের গেটের বাইরে।" (Kolkata News)


পড়ুয়াদের জন্য পোশাক সংক্রান্ত নির্দেশিকা বা সেই নিয়ে ফতোয়া যদিও নতুন নয়। কিন্তু কলেজে ভর্তির প্রাথমিক শর্ত হিসেবে পোশাক নিয়ে মুচলেকা দেওয়ার এই ঘটনা নজিরবিহীন। মিন্টোপার্কের আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস কলেজে এমনই বেনজির ঘটনা ঘটতে দেখা গেল। সেখানে পড়ুয়া এবং তাঁদের অভিভাবকদের কাছ থেকে মুচলেকা আদায় করা হচ্ছে, যাতে লিখিত দিতে হচ্ছে যে, 'ছেঁড়া জিন্স বা অশালীন পোশাক পরব না'। ভর্তির আগে পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের সই করে এই মুচলেকা জমা দিতে হচ্ছে। 


স্কুল পেরিয়ে কলেজে ভর্তি হন যে সমস্ত ছাত্রছাত্রী, বয়সের মাপকাঠিতে তাঁদের অধিকাংশই সাবালক হন। সেই নিরিখে নিজের পছন্দ অনুযায়ী পোশাক পরার স্বাধীনতা রয়েছে তাঁদের। এখানে মুচলেকা আদায় করে সেই ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। সেই নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ছেন আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস কলেজ কর্তৃপক্ষ। যদিও নিজেদের অবস্থানে অনড় তাঁরা। 


আরও পড়ুন: Jobs In West Bengal: উত্তর ২৪ পরগনায় স্বাস্থ্যবিভাগে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি, কবে আবেদনের শেষ তারিখ ?


এবিপি আনন্দের মুখোমুখি হয়ে কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, "দেখুন আমরা গত বছর নোটিস দিয়েছিলাম। তা নিয়ে বিতর্কও হয়। তার পরও দেখা যাচ্ছে, দু'-একজন ছেঁড়া জিন্স পরে চলে আসছে কলেজে। আমি যেহেতু মনে করেছি এটা অশালীন, কোনও ভাবেই এটাকে অ্যালাউ করব না। তাই আরও কড়া অবস্থান নিতে, ভর্তি হওয়ার সময়ই হলফনামা ফর্মে সই করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পড়ুয়ার অভিভাবককেও সই করতে হবে যে, কেউ ছেঁঢ়া জিন্স পরে কলেজে আসতে পারবে না।"


কিন্তু এতে তো ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে! তা স্বীকার করে নিলেও, সিদ্ধান্ত বদলের প্রশ্ন নেই বলে জানিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ। তিনি বলেন, "কী পরতে পারবে, সেটা কলেজের বাইরে। কলেজে ঢুকলে আমার এক্তিয়ারে, সেক্ষেত্রে আমার নিয়ম, আমার শৃঙ্খলা, আমি যেটাকে শালীনতা বলে মনে করব, সেটাকেই মেনে চলতে হবে।"


পোশাক ফতোয়া জারির নেপথ্যে শালীনতাকে কারণ হিসেবে দেখানো হলেও, সমালোচনা এড়াতে পারছেন না কর্তৃপক্ষ। বরং তাঁদের যুক্তি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলার যে দীর্ঘমেয়াদি ছবি সামনে এসেছে, তাতেই শৃঙ্খলার প্রশ্ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ব়্যাগিং নিয়েও কড়া অবস্থান নিচ্ছেন তাঁরা। কেউই এই ধরনের ঘটনায় যুক্ত থাকলে, বের করে দেওয়া হবে, ফেরত দেওয়া হবে না টাকাও।