কলকাতা: আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় এক ব্যক্তিকে উদ্ধার এবং তার পর মেডিক্যাল কলেজে তাঁর মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় রাজনীতি। সেই আবহেই মৃত ব্যক্তির ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট সামনে এল। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, মৃতের মস্তিষ্কে টিউমার ছিল। আগে থেকে বেশ কিছু শারীরিক অসুস্থ ছিল তাঁর। ম্য়ালিগন্যান্সির চিকিৎসাও চলছিল ওই ব্যক্তির। (Amherst Street Case)
বৃহস্পতিবার পুলিশের মর্গে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়। তাতে প্রাথমিক যে রিপোর্ট এসেছে, তাতে বলা হয়েছে, মৃতের মস্তিষ্কে টিউমার ছিল। চিকিৎসাও চলছিল ম্যালিগন্যান্সির। মস্তিষ্কে অ্যানুরিজম তৈরি হয়ে হঠাৎ ফেটে যাওয়ার কারণেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। শুধু তাই নয়, মৃতের দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি বলেও দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে। (Kolkata News)
যদিও এই রিপোর্ট মানতে নারাজ মৃতের পরিবারের লোকজন। নতুন করে ময়নাতদন্তের আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। যদিও প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, "কত বার ময়নাতদন্ত হবে? মানসিক অবস্থার কথা ভাবতে হবে তো?" বৃহস্পতিবার আদালতে সরকার পক্ষের আিনজীবী জানান, ময়নাতদন্তের ভিডিওগ্রাফি হয়েছে। পরিবারের কাউকে ময়নাতদন্তের কাউকে কি রাখা যেত না, এই প্রশ্নও তোলে আদালত। এর পাশাপাশি, বুধবার কলেজ স্ট্রিট বন্ধ ছিল। কে মামলা করল, তৃতীয় পক্ষ বিষয়টি হাইজ্যাক করার চেষ্টা করছে কিনা, এই প্রশ্নও তোলে আদালত। এর জবাবে অভিযোগকারীর আইনজীবী জানান, মৃতের পরিবারের লোকজন নিজে থেকেই তাঁর কাছে এসেছিলেন। শুক্রবার ফের শুনানি রয়েছে মামলার।
চুরি যাওয়া ফোন নিয়ে থানায় আসতে বলায়, বুধবার আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় উপস্থিত হন বছর ৪২-এর অশোক সিংহ নামের ওই ব্যক্তি। এর পর থানার মেঝেয় তাঁকে পড়ে থাকতে এবং তাঁর মুখ দিয়ে রক্ত বেরোতে দেখা যায় বলে অভিযোগ করেন পরিবারের লোকজন। পুলিশের তরফে মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলে, তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসরা।
সেই ঘটনায় বুধবার থেকে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। থানায় ঢোকার সময় দিব্যি সুস্থ ছিলেন, পুলিশই পিটিয়ে ওই ব্যক্তিকে মেরে ফেলেছে বলে অভিযোগ তোলে পরিবার। সেই অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ জানায়, আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন ওই ব্যক্তি। থানায় এসে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। মাটিতে পড়ে যান। কিন্তু পুলিশের দাবি মানতে রাজি হননি মৃতের পরিবার এবং বিজেপি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে চাওয়ার পাশাপাশি, সিবিআই তদন্তের দাবি জানায় তারা। রাজ্য সরকারের কোনও হাসপাতাল নয়, কেন্দ্রীয় হাসপাতালে মৃতের ময়নাতদন্ত করতে হবে বলেও দাবি তোলা হয়।