অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা: বিসর্জন চলাকালীন বাবুঘাটে দুর্ঘটনা (Babughat)। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গঙ্গার পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজনকে ধাক্কা মারে কলকাতা পৌরসভার পে লোডার। একজন জখম হওয়ার আশঙ্কা। এরপরই উত্তেজনা ছড়ায়। পে লোডার চালককে মারধর করা হয়। বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন পৌরসভার কর্মীরাও। পুলিশের সামনেই মারধর করা হয় বলে পৌরসভার (Kolkata Municipal Corporation) কর্মীদের অভিযোগ।


বিসর্জনের সময় বাবুঘাটে বিপত্তি, অশান্তি পৌরসভা কর্মীদের সঙ্গে


 এ দিন বিসর্জনের জন্য গঙ্গার ঘাটে পুলিশি নিরাপত্তা ছিল ঢিলেঢালা। নিরঞ্জনের সময় নিয়ম না মেনে প্রচুর মানুষ ঘাটের ধারে ভিড় করেন। অন্য সময় প্রতিমা পিছু নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষের সংখ্যা বেঁধে দেওয়া হয়। এ বছর তেমন কোনও নির্দেশ চোখে পড়েনি। ফলে যে সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে, গঙ্গার পাড়ে কার্যত উচ্ছ্বাসে ভআসছইলেন কিছু মানুষ। কমপক্ষে চারটি পরিবারের লোকজন প্রতিমা বিসর্জন করতে হাজির হয়েছিলেন। 


সেই সময় পাড় থেকে দূরে ফাঁকা জায়গাতেই দাঁড়িয়েছিল পে লোডারটি। একটি কাঠামো তুলতে এর পর সেটি এগিয়ে আসে। সেই সময়ই ঘটে যায় বিপত্তি। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অথবা ব্রেক ফেল করেই এই বিপত্তি ঘটে বলে এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে। ফলে দ্রুত গতিতে পে লোডারটি পাড়ের দিকে এগিয়ে আসে এবং কয়েকজনকে ধাক্কা মারে। তাতে চোট পান বেশ কয়েরক জন। এর মধ্যে একজন গুরুতর আহত হন। রক্তপাতও ঘটে তাঁর। পে লোডারের নিচে জুতোও আটকে থাকতে দেখা গিয়েছে। 


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: এটা চলে যাওয়া নয়, মা আমাদের হৃদয়েই থাকেন, রাজ্যবাসীকে দশমীর শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর


এতেই চটে যান বিসর্জনের জন্য ঘাটে ভিড় করা মানুষ জন। সকলে মিলে পে লোডারের চালকের উপর চড়াও হন। চাকায় পা দিয়ে উঠে, চালকের আসনে বসে থাকা ব্যক্তিকে এলোপাথাড়ি কিল, চড়, ঘুষি মারা হয়। কোনও রকমে সেই সময় পে লোডার থেকে নেমে যান খালাসি। চালককে পে লোডার থেকে নামিয়েও বেধড়ক মারধর করা হয়। 


ঘটনার সময় আরও কিছু পুজো কমিটি এবং বাড়ির প্রতিমা নিয়ে হাজির কিছু মানুষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসেন। সকলকে নিরস্ত করার চেষ্টা করেন তাঁরা। কিন্তু তাতে মারমুখী জনতার রোষের শিকার হন তাঁরাও। দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলা বেধে যায়। তার জেরে অশান্ত হয়ে ওঠে বাবুঘাট চত্বর। 


তবে প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, ঘটনার সময় বাবুঘাটের ওই জায়গায় পুলিশের কাউকে দেখা যায়নি। তাতেই পরিস্থিতি তেতে ওঠে।  এর পর খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে পৌঁছন কলকাতা পৌরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য দেবাশিস কুমার। তাঁকে প্রশ্ন করলে বলেন, "পুলিশের থেকে ঘটনার সম্পর্কে জানতে পেরেছি। দুর্ঘটনা দুর্ঘটনাই। ভবিষ্যতে যাতে আরও সতর্ক হয়ে কাজ করা যায়, দেখছি।" ঘটনার সময় পুলিশের অনুপস্থিতির কথা উঠলে জানান, পুলিশ জানিয়েছে, তারা ছিল। 


ঘটনাস্থলে পৌঁছন দেবাশিস কুমার


কিন্তু প্রতিমা নিয়ে এত মানুষ ভিড় করছেন কেন, কেন নির্দিষ্ট সংখ্যা বেঁধে দেওয়া হল না, প্রশ্ন করা হয় দেবাশিস কুমারকে। উত্তরে তিনি বলেন, "পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম চালু হওয়ার কথা। কেন হয়নি দেখছি। আরও সাবধান হতে হবে আমাদের। "