কলকাতা: দশমীর দুপুরে একদফা ঝামেলা হয়েছিল বটে। তবে মারাত্মক আকার ধারণ করেনি তা। তার মধ্যেই দুর্গাপ্রতিমা বিসর্জন (Goddess Durga Immersion) ঘিরে জলপাইগুড়িতে ঘটে গিয়েছে ভয়াবহ দুর্ঘটনা (Jalpaiguri Flash Flood)। বিসর্জন করতে এসে হড়পা বানের তোড়ে ভেসে মারা গিয়েছেন বেশ কয়েক জন। নিখোঁজ এখনও অনেকে। সেই নিয়ে রাজনৈতিক তরজার মধ্যেই কলকাতার বাবুঘাটের (Babughat) পরিস্থিতি তদারকি করে দেখলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। বৃহস্পতিবার একাদশীর দিন শহরের বড় কমিটির পুজোগুলির বিসর্জন। তার আগে, দুপুরে পরিস্থিতি পরিদর্শনে যান ফিরহাদ।


বিসর্জন সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখলেন ফিরহাদ 


এ দিন দুপুরে বাবুঘাটে পৌঁছন ফিরহাদ। সেখানে প্রতিমা নিরঞ্জনের যাবতীয় ব্য়বস্থাপনা খতিয়ে দেখেন তিনি। কথা বলেন কলকাতা পুলিশ এবং পৌরসভার কর্মীদের কাছে। কোথাও যেন কোনও বিচ্যুতি চোখে না পড়ে, স্পষ্ট জানিয়ে দেন। ভিড় বাড়লে, পরিস্থিতি সামাল দিতে যাতে যথেষ্ট সংখ্যক লোক থাকে, তা নিশ্চিত করেন ফিরহাদ। কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, তার জন্যও কড়া পদক্ষেপ করতে বলে যান মেয়র ফিরহাদ। 


এ দিন জলপাইগুড়ি নিয়েও মুখ খোলেন ফিরহাদ। প্রশাসনের বিরুদ্ধে যেখানে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরা, সেই অভিযোগ খারিজ করেছেন ফিরহাদ। প্রশাসনের তরফে কোনও খামতি ছিল না বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি জানান, কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, তার জন্য চেষ্টায় কোনও খামতি রাখা হয় না। জলপাইগুড়ির ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। কিন্তু হঠাৎ করে জল এসে যাওয়াতেই বিপত্তি ঘটেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। যদিও প্রকৃতিকে দায়ী করে প্রশাসন দায় ঝেড়ে ফেলছে বলে দাবি বিরোধীদের।



আরও পড়ুন: BJP: মালবাজারে বিসর্জনে দুর্ঘটনা, কাল ঘটনাস্থলে যাচ্ছে বিজেপির ৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল


উল্লেখ্য, দশমীর দিন মূলত বাড়ির পুজোগুলির বিসর্জন হয়েছে বাবুঘাটে। একাদশীতে শহরের তাবড় বারোয়ারি পুজোগুলির বিসর্জন রয়েছে। তার মধ্যে জলপাইগুড়ির ঘটনায় উদ্বিগ্ন প্রশাসন। সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করেছে নবান্ন। তার মধ্যেই শহরে গঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন নিয়ে সতর্ক কলকাতা পৌরসভা এবং কলকাতা পুলিশ। এ দিন একে একে প্রতিমা আসতে দেখা গিয়েছে বাবুঘাটে। সবমিলিয়ে বিসর্জন ঘিরেও হইহই ব্যাপার। বহু মানুষ ভিড় করেছেন সেখানে। চলছে ছবি তোলা, প্রতিমাদর্শন। 


কার্নিভ্যাল নিয়েও কড়া বিধিনিষেধ শহরে


এর পাশাপাশি, এ দিন দুপুরে কলকাতা পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করেন শহরের তাবড় পুজো কমিটিগুলি। করোনার জেরে গত দু’বছর শহরে পুজো কার্নিভ্যাল বন্ধ ছিল। এ বার পরিস্থিতির উন্নতি হতে ফের কার্নিভ্য়ালের আয়োজন হচ্ছে। তার জন্যই এ দিন দু’পক্ষের বৈঠক হয়। কার্নিভ্যালে কত জন অংশ নিতে পারবেন, কী ভাবে অংশ নেবেন, কী কী নিয়ম মানতে হবে, তা বুঝিয়ে দেয় পুলিশ। পুজো কমিটিগুলিও তা মানতে রাজি হয়েছে। জানা গিয়েছে, তিনটি করে ট্রেলারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তিন মিনিটের থিম সং বাজাতে পারবে কমিটিগুলি। শব্দবাজি ফাটানো যাবে না। আলাদা করে কোনও মাইকিং করা যাবে না। ট্রেলার থেকে প্রতিমার উচ্চতা য়েন হয় ১৬ ফুটের মধ্যে। প্রতিমার উচ্চতা বেশি এমন ১৭টি কমিটিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের ঘুরপথে যেতে হবে কার্নিভ্যালে।