অর্ণব মুখোপাধ্যায়, অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা : তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে বহুতল। মাথার ছাদ নিয়ে অনিশ্চয়তায় একাধিক পরিবার। ক্রমেই বিপদ বাড়ছে বাঘাযতীনের বিদ্যাসাগর কলোনির বাসিন্দাদের। ক্রমেই আরও হেলে পড়ছে বহুতল। তাতেই রাতের ঘুম উড়েছে ভেঙে পড়া বহুতলের পাশের বাড়িটির বাসিন্দাদের। তাঁদের অভিযোগ, আরও হেলে পড়ছে বহুতল। যে কোনও মুহূর্তে তা ধসে পড়তে পারে পাশের বাড়িটির উপর। তাই এই শীতে বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় বাস করতে হচ্ছে পাশের বাড়ির মানুষদেরও।
বহুতল দুর্ঘটনাক পর থেকেই আশেপাশের বাসিন্দারা আতঙ্কিত। যে কোনও মুহূর্তে চারতলা বহুতল হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তে পারে পাশেরটির উপর । মঙ্গলবার থেকেই বহুতল ভেঙে ফেলার কাজ শুরু করেছে কলকাতা পুরসভা। পাশের বাড়ির মালিকের আশঙ্কা, তাঁর বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
বহুতলের বাসিন্দাদের দাবি, ২০১৩ সালে ফ্ল্যাট হস্তান্তরের ৫-৬ বছর পর সমস্যা শুরু হয়। প্রোমোটার সম্প্রতি হরিয়ানার সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে বহুতল সোজা করার কাজ করাচ্ছিলেন। স্থানীয়দের দাবি, জলাজমি বুজিয়ে বহুতল তৈরি হয়েছিল। পাশাপাশি, পুরসভার অনুমতি ছাড়াই তিনতলা ফ্ল্যাটবাড়ি চারতলা করা হয়েছিল বলে জানা যাচ্ছে। সেই কারণেই বিপত্তি। একটা চার তলার বহুতল নির্মাণ করতে গেলে সামনের রাস্তা যতটা চওড়া দরকার, ততটাও নেই। এখন এই বাড়ির প্রোমোটার সুভাষ রায়কে খুঁজে বেড়াচ্ছে পুলিশ। ফ্ল্যাটের মালিক এবং সারাই কাজ করা হরিয়ানার সংস্থার বিরুদ্ধে নেতাজিনগর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
এ তো গেল বাসিন্দাদের সমস্যার কথা, বাঘাযতীনের বিদ্যাসাগর কলোনিতে বহুতল হেলে পড়ার ঘটনায় শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন। বাম আমলের ঘাড়ে দায় ঠেলার চেষ্টা করছেন যাদবপুরের তৃণমূল বিধায়ক দেবব্রত মজুমদার। তাঁর দাবি, ৪০-৫০ বছর আগে এখানে জলাজমি বোজানো হয়। কলোনি এলাকায় এমন বেআইনি নির্মাণ অনেক রয়েছে। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর বেআইনি নির্মাণ তৈরির প্রবণতা কমেছে বলেও দাবি করেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক। অন্যদিকে আবার বেআইনি নির্মাণের প্রতিবাদে বাঘাযতীনের বিদ্যাসাগর কলোনিতে বিক্ষোভ দেখায় সিপিএম। বামেদের প্রশ্ন, 'কাউন্সিলর কেন পুরসভাকে জানাননি? অনুমতি ছাড়া কীভাবে চারতলা তৈরি হল? পুরসভা কী করছিল?' এই ঘটনায় তৃণমূল কাউন্সিলরের পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ দেখায় সিপিএম।
আরও পড়ুন, 'TMC নেতা আক্রান্ত হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়, কিন্তু অভিযুক্ত যদি শাসক হয় ..' !