কলকাতা: উৎসবের মরসুমও প্রায় শেষের পথে। তবু ডেঙ্গির প্রকোপ অব্যাহত। ভবানীপুরে ফের ডেঙ্গিতে মৃত্যু হল এক তরুণীর। হাসপাতাল সূত্রে খবর, প্রসবের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যু হয়। মৃত গুড়িয়া রজকের বয়স মাত্র ২২ বছর।
জানা গিয়েছে , ভবানীপুরের বাসিন্দা গুড়িয়া। রবিবার ডেঙ্গি পজিটিভ রিপোর্ট আসায় জরুরি ভিত্তিতে প্রসব করানো হয় তাঁকে। তারপরেই মৃত্যু হয় গুড়িয়া রজকের। ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে ভবানীপুরের ২২ বছরের গুড়িয়া রজকের মৃত্যু হয় সেদিনই। ভবানীপুরের নন্দনপার্ক এলাকার বাসিন্দা ২২ বছরের গুড়িয়া রজক। মৃত গুড়িয়া রজকের ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গির উল্লেখ রয়েছে।
সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখালেও জীবন-যুদ্ধে হেরে গেল। প্রাণঘাতী ডেঙ্গি এবার প্রাণ কাড়ল সদ্য মা হওয়া এক তরুণীর। সন্তান জন্ম দেওয়ার ৪০ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু হল প্রসূতির। ভবানীপুরের বাসিন্দা গুড়িয়া রজক। বয়স মাত্র ২২। একবছরও হয়নি বিয়ে হয়েছিল।
৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। দিন গুণছিলেন, কবে, ভূমিষ্ট হবে তাঁর আত্মজ। সন্তানকে দুই হাতের মধ্যে জড়িয়ে নেবেন। এরইমধ্যে, শনিবার, আচমকাই কাঁপুনি গিয়ে জ্বর আসে গুড়িয়ার। পরিবার সূত্রে খবর, ওইদিন সকালেই তাঁর প্লেটলেট টেস্ট করা হয়। রাতে রিপোর্ট আসে। প্লেটলেট ছিল ১ লক্ষ ৩০ হাজার।
ডেঙ্গি পজিটিভ। রবিবারদিনই অন্তঃসত্ত্বাকে SSKM মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন আত্মীয়রা। জরুরি ভিত্তিতে ডেলিভারি করানোর সিদ্ধান্ত নেন চিকিত্সকরা। সেই মতো, রাত ১০টায়, হয় অস্ত্রোপচার। পুত্র সন্তানের জন্ম দেন গুড়িয়া। কিন্তু এরপর শুরু হয় মারাত্মক রক্তক্ষরণ। যমে মানুষে টানাটানি।
SSKM সূত্রে খবর, তরুণীর অস্ত্রোপচারের জায়গায় দু’বার সেলাই করতে হয়। সোমবার ৮ ইউনিট প্লেটলেট ও ৪ ইউনিট রক্ত দেওয়া হয়। কিন্তু মঙ্গলবার সব চেষ্টা শেষ। মৃত্যুর কাছে হার মানতে হয় তরুণীকে। গুড়িয়ার ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গির উল্লেখ করা হয়েছে। সূত্রের খবর, রাজ্যে এখনও পর্যন্ত মারণ ডেঙ্গি প্রাণ কেড়েছে ৫১ জনের। তার মধ্যে, ১৭ জনই কলকাতার।
আলোর উত্সবেও ডেঙ্গি-উদ্বেগ (Dengue fear)। একসঙ্গে দাপট ডেঙ্গির দুই সেরোটাইপের (Serotype)। ডেঙ্গ ২, ডেঙ্গ ৩ দুই সেরোটাইপের জোড়া হানা। স্বাস্থ্যভবনের পাঠানো ৪০০ নমুনার মধ্যে ৩৭%-এ মিলেছে ডেঙ্গ ৩। পরীক্ষিত নমুনার মধ্যে ২৭%-এ ডেঙ্গ ২-র হদিশ, এমনই উল্লেখ রয়েছে নাইসেডের রিপোর্টে। ‘২ শতাংশ নমুনায় একসঙ্গে ডেঙ্গ ২ ও ডেঙ্গ ৩-এর হদিশ’। চলতি বছরে রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্ত ৪০ হাজার পার, মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৫০ জনের।
বছরের শেষেও ডেঙ্গির দাপট কমছে না-
আবহাওয়ার (Weather) খামখেয়ালিপনা, সঙ্গে অপরিকল্পিত নগরায়ন। এই কারণে বছরের শেষেও ডেঙ্গির দাপট কমছে না। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। সেই সঙ্গে তাঁদের পরামর্শ, জ্বর হলেই চিকিৎসকের কাছে যান।
ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, অক্টোবরের শেষ। বর্ষার বিদায় এবং শীত আসার সময়। কিন্তু, কমার বদলে বেড়েই চলেছে ডেঙ্গির প্রকোপ ! যা দেখে উদ্বেগ বাড়ছে চিকিৎসকদের। ডেঙ্গির এই বাড়বাড়ন্তের জন্য আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার পাশাপাশি, অপরিকল্পিত নগরায়নকেও দায়ী করছেন চিকিৎসকদের একাংশ।