কলকাতা: কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘভাতার (DA) দাবিতে অনড় সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। ২২ ফেব্রুয়ারি রাজ্যজুড়ে কর্মবিরতির ডাক সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের। ২২ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের সমস্ত সরকারি দফতরে কর্মবিরতির ডাক। আগামী ৩ মার্চ মিছিলের পর শহিদ মিনারে মহা সমাবেশের ডাক DA আন্দোলনকারীদের। ৬ এবং ৭ মার্চ, দুই দিন রাজ্য জুড়ে সমস্ত ক্ষেত্রে ধর্মঘটের ডাক সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের। (DA Protests)
এদিন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের সমস্ত সরকারি দফতরে কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনকারীদের দাবি, লাগাতার অনশন চলছে তাঁদের। ১৮ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে জেলা পরিষদের দফতরের সামনে একদিনের প্রতীকী অনুশন কর্মসূচি হবে। এর পর ২২ তারিখ রাজ্য জুড়ে কর্মবিরতি পালিত হবে। (Kolkata News)
রাজ্য বিধানসভায় দু'দিন আগেই বাজেট পেশ করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সেখানে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের DA আরও ৪ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের প্রাপ্ত DA-র হার বেড়ে ১৪ শতাংশ হল। কেন্দ্রের সঙ্গে ফারাক কমল আরও কিছুটা। কেন্দ্রের সঙ্গে ফারাক এই মুহূর্তে ৩২ শতাংশ। চলতি বছরের মে মাস থেকে কার্যকর হবে নতুন হারে DA.
আরও পড়ুন: West Bengal Assembly: বিধানসভায় ফের 'চোর' তরজা, শুভেন্দুর সঙ্গে হাতাহাতির উপক্রম TMC বিধায়কের
এর আগে, ডিসেম্বরেও এক দফা DA বাড়ানো হয় রাজ্যের সরকারি কর্মীদের। প্রাক-বড়দিন অনুষ্ঠানে গিয়ে সেবারও ৪ শতাংশ DA বাড়ানোর ঘোষণা করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তার পরও নিজেদের অবস্থানে অনড় সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীরা যে হারে DA পান, রাজ্যকেও সেই একই হারে DA দিতে হবে বলে দাবি তাঁদের।
যদিও আন্দোলনকারীদের দাবি মানে নারাজ। রাজ্য সরকারের দাবি, কেন্দ্র এবং রাজ্যের বেতন পরিকাঠামো সম্পূর্ণ আলাদা। এ রাজ্যে পেনশন কমিশন চালু থাকা সত্ত্বেও, সরকারি কর্মীদের বাড়তি DA দেওয়া হয়। রাজ্য সরকার এটা নিজের ইচ্ছেয় দেয়। DA দিতে মোটেই বাধ্য নয় রাজ্যের সরকার।
২০০৪ সালে পুরনো পেনশন প্রকল্প তুলে দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের জন্য নতুন পেনশন প্রকল্প চালু হয়। একাধিক রাজ্যেও সেই ব্যবস্থা চালু হয়। পুরনো পেনশন প্রকল্প অনুযায়ী, ২০ বছর চাকরি করে অবসর নিলে মূল বেতনের ৫০ শতাংশ পেনশন পাওয়া যেত। নতুন পেনশন প্রকল্পে মূল বেতনের ১৪ শতাংশ কেটে নিয়ে পেনশন তহবিলে জমা করা হয়। তাতে আরও ১০ শতাংশ দেয় সরকার। সেই টাকা শেয়ার বাজারে ঢেলে যা লাভ হয়, সেই টাকায় পেনশন দেওয়া হয়, যা মূল বেতনের ৫০ শতাংশও হতে পারে, আবার ৫ শতাংশও।
অর্থাৎ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীদের পেনশন নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও, সরকারের দায় থাকে না। বাংলায় এই নতুন পেনশন প্রকল্প চালু হয়নি আজও। বামেরাও করে যায়নি, মমতাও নতুন পেনশন প্রকল্প চালু করেননি। পুরনো পেনশন প্রকল্পই চলছে বাংলায়। আর তাতেই রাজ্য সরকার অনড় অবস্থান নিচ্ছে।