আবির দত্ত, ঝিলম করঞ্জাই, দমদম : ' সৌগত রায় কেন বলল বাজ পড়ে আর বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু এক? ' দমদমের মতিঝিলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যর ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে পরিবার। মেয়ের মর্মান্তিক পরিণতির জন্য, স্থানীয় বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলরকে দায়ী করছেন সন্তানহারা মা! মাথা চাপড়াচ্ছেন আর মাঝে মাঝেই ডুকরে ডুকরে উঠছেন। যে মেয়ের জন্মদিন ৭ দিন পর, তাকে এভাবে হারিয়ে শোকে মুহ্যমান পরিবার। আর মায়ের মন বলছে '
টাকা নিয়ে আর কী হবে'।
এমনকী তড়িদাহত হয়ে মৃত মেয়ের মা ফেরালেন রাজ্য সরকারের ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যও। বললেন, 'আমি বাড়ি বেচে ৪ লক্ষ টাকা দেব, আমার মেয়েকে ফেরত দিক'। শোক, আর্ত চিৎকার .... মৃত অনুষ্কার মা ডুকরে উঠে খালি বলে চলেছেন, আমার মেয়ে শেষ হয়ে গেল, আমি বাঁচব কী করে....। এই মুহূর্তে কোনও ক্ষতিপূরণ তাঁদের ক্ষতি মেটাতে পারবে বলে মনে করছে না পরিবার দুটি। তাঁর দাবিও একটাই, যাদের গাফিলতিতে মেয়ে শেষ হয়ে গেল, তাদের শাস্তি দিতে হবে।
বুধবার রাতে দুই স্কুল পড়ুয়ার মর্মান্তিক পরিণতির পর, বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থলে যান দক্ষিণ দমদম পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের কোঅর্ডিনেটর সুরজিৎ রায় চৌধুরী। আর মৃত স্নেহার বাড়ির কাছে পৌঁছতেই ক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। তিনি বলেন, ''অনেক আগে থেকে বাতি বন্ধ রাখার জন্য বলেছিলাম, স্থানীয়রা বলেছিল জ্বালানোর জন্য। এরকম হবে জানতম না। এদিন মৃত বালিকার বাড়িতে যান সৌগত রায়।তারপর ঘটনাস্থলে পৌঁছন দমদমের তৃণমূল বিধায়ক ও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। অভিযোগ, পাল্টা দাবি...এসব এখন অনেক কিছু হচ্ছে। কিন্তু বান্ধবনগর যে দুই বন্ধুকে হারাল, তার দায় কে নেবে?
বুধবার টিউশনে যাওয়ার সময় বৃষ্টির জমা জলে দাঁড়িয়েই, লাইটপোস্টে হাত দিয়ে ফেলেছিল ১২ বছরের স্নেহা বণিক। বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে একইভাবে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে অনুষ্কারও। কিন্তু এই মর্মান্তিক ঘটনার পরও দমদমের মতিঝিলের বান্ধবনগরের ছবিটা বদলায়নি। বৃহস্পতিবার সকালেও রাস্তায় ছিল গোড়ালির উপর জল। সেই একইভাবে বিভিন্ন লাইটপোস্টে বিপজ্জনক অবস্থায় বেরিয়ে রয়েছে বিদ্যুতের তার।