সত্যজিৎ বৈদ্য, কলকাতা : ১১ দিনে ৩ বার। ফের শহরে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড। ক্য়ামাক স্ট্রিটে রেস্তোরাঁ, কসবার অ্য়াক্রোপলিস মলের পর এবার গার্স্টিন প্লেসে একটি বাড়িতে আগুনে আতঙ্ক ছড়াল। আর এই আগুনে যে শুধু বাড়ি পুড়ল তা নয়, অনিশ্চিত হয়ে পড়ল ২৫ টি পরিবারের ভবিষ্যৎ। সেই সঙ্গে প্রায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল একদল  আইনজীবীর। 


বহু পুরনো এই বাড়ির এক পাশে রয়েছে সেন্ট জনস চার্চ। অন্য়দিকে রয়েছে কলকাতার প্রতিষ্ঠাতা জোব চার্নকের সমাধি। বাড়ির অদূরেই ব্য়াঙ্কশাল আদালত। তাই একটি আইনি সংস্থার অফিসও ছিল এই বাড়িতেই। আর যে কোনও কেসের ভিত দাঁড়িয়ে থাকে প্রামাণ্য নথি, দলিল-দস্তাবেজ, কাগজপত্রের উপর। আর আইনজীবীদের বহু পরিশ্রমের ফসলও আজকাল স্টোর থাকে ল্যাপটপেই। বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল এসব কিছুই। 


দমকলের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাড়ির বাসিন্দারা এবং স্থানীয় কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠক। বাড়িটির একতলা ও দোতলায় রয়েছে আইনজীবীদের চেম্বার ও বেশ কিছু অফিস। আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেছে একতলা ও দোতলা। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গ্রাউন্ড ফ্লোর। পোড়া বাড়ির মধ্যে কিছুই কি আছে ঠিক অবস্থায় ? একবার ঢুকতে চেয়েছিলেন আইনজীবীরা। এঁদের অনেকেরই জরুরি কাগজপত্র থেকে ল্যাপটপ , সবই ছিল ভিতরে।  দমকলমন্ত্রী ঘটনাস্থলে পৌঁছতে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তাদের একাংশ। তাঁদের একবার ঢুকতে দেওয়ার দাবি করা হয়। 


দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু জানান, 'খুব পুরনো বাড়ি। আমরা এখন আগুনটা নিভিয়ে দিয়েছি।  শুনেছি এখানে অনেক বাড়াটে আছে। কোনও একটা ঘরে কেমিক্য়াল মতো কিছু ছিল, সেটা আমরা তদন্ত করতে বলছি। পুলিশও এখানে আছে। পুলিশকেও আমি বলব যদি ঘরে কেউ কেমিক্য়াল রেখে থাকে, যদি সত্য়ি সেটা হয়, খারাপ ব্য়াপার এটা। তদন্ত এবং ফরেন্সিক যা যা করার দমকল সেটা করবে' 


এদিন ভোর রাতেই মুহূর্তের মধ্য়ে কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় আকাশ। এক পাশে সেন্ট জনস চার্চ ও অন্য়দিকে কলকাতার প্রতিষ্ঠাতা জোব চার্নকের সমাধি। এই প্রসিদ্ধ এলাকায় আগুন থেকে আতঙ্ক ছড়ায় স্থানীয়দের মধ্য়ে। স্থানীয় বাসিন্দা ও স্থানীয় কংগ্রেস কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠকের অভিযোগ,  ঘটনাস্থল থেকে দমকলের সদর দফতরের দূরত্ব ১০ মিনিটের হলেও খবর দেওয়ার প্রায় এক ঘণ্টা পর আসে দমকল। দমকলের ৬টি ইঞ্জিনের প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আনে আগুন।