হিন্দোল দে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা : এলাকা জুড়ে ছাইয়ের দাপট। গোটা বাড়ির ছাদ-উঠোন থেকে শুরু করে ধানক্ষেত, সবজিক্ষেতে ছাইয়ের পরত। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ডহারবার বিধানসভা কেন্দ্রের নীলা গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, দূষণের জেরে প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়েছে তাদের। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাতেও ভুগছেন অনেকে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই গ্রামের পাশেই পেপারমিল থেকে মারাত্মকভাবে ছড়াচ্ছে দূষণ। পরিস্থিতি এমন যে, বাড়ি ছেড়ে অন্যত্রও চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন নূরপুর পঞ্চায়েতের নীলা গ্রামের একাধিক মানুষ। এমনকী স্থানীয় BDO, জেলাশাসক থেকে শুরু করে স্থানীয় রামনগর থানা, স্থানীয় বিধায়ক এমনকী দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকেও জানিয়েও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ। দূষণের কথা স্বীকারও করে নিয়েছে পেপারমিল কর্তৃপক্ষ। সংস্থার এইচ আর ম্যানেজার জানান, 'আমরা চেষ্টা করছি, সবাইকে সাথে নিয়ে প্ল্যান্টটা যাতে চলে এবং আপনাদের যে সমস্যাটা যাতে সমাধান করতে পারি। ++ খুব দ্রুত আমরা চেষ্টা করব এটা যাতে সমাধান হয়ে যায়।'
ডায়মন্ড হারবার বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে এই নীলা গ্রাম, সেখান থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে, ফলতা বিধানসভা কেন্দ্রের আওতায় রয়েছে এই পেপারমিল। সেই কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ তুলেছেন গ্রামবাসীদের একাংশ। স্বপ্না মিদ্যা নামে এক বাসিন্দা বলেন, 'দূষিত জল, পচা গন্ধ। মাঝেমাঝে নীল, সাদা, কালো বিভিন্ন রঙের জল বেরোচ্ছে। ৫-৭টা গ্রাম দূষিত হয়ে যাচ্ছে। চাষ হচ্ছে না। যখন আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে গেটের সামনে যাচ্ছি কোম্পানির, নিপন কোম্পানির পেপারমিল। যখন ওখানে যাচ্ছি, ওখান থেকে আমাদের তাড়া করছে।' গৌরী মণ্ডল নামে আরেক বাসিন্দার দাবি, 'আমার ৩টে ছেলে, ৩টে ছেলে সব বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে, ছেলেপুলে নিয়ে। নোংরার জন্য। টিকতে পারছে না।'
এ প্রসঙ্গে ডায়মন্ডহারবারের SDO শুভ্রজিৎ গুপ্ত জানিয়েছেন, এর আগে ওই পেপারমিল কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ১০ দিনের ডেডলাইন বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। তা ইতিমধ্যেই অতিক্রান্ত। আরও ৫ দিনের ডেডলাইন দেওয়া হয়েছে তাদের। এর মধ্যে পদক্ষেপ না নিলে প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।