কলকাতা : দিল্লি বা বিহারে বসে নাশকতার ব্লু প্রিন্ট তৈরির ছক ছিল আব্দুল রকিব কুরেশি ও মহম্মদ সাদ্দামের । এসটিএফের হাতে ধৃত ৩ সন্দেহভাজন IS জঙ্গিকে জেরায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। শুধু তাই নয়, আরও মারাত্মক সব অভিযোগ রয়েছে এসটিএফ এক হাত ধৃতদের বিরুদ্ধে।


কোথায় নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা


গোয়েন্দাদের দাবি,  চলতি মাসেই বিহার বা দিল্লিতে দেখা করার পরিকল্পনা ছিল ধৃত সন্দেহভাজন জঙ্গি আবদুল রকিব কুরেশি। সেখানে বসেই সংগঠন বাড়ানো এবং কোথায় নাশকতা চালানো হবে, তা স্থির করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়। অর্থাৎ বড়সড় নাশকতা করার পথেই চলছিল সন্দেহভাজন জঙ্গিরা, তদন্ত বলছে এমনটাই। 


SIMI-র প্রাক্তন সদস্য কুরেশি


এমনিতেও STF দাবি করেছেন, ধৃতদের বিরুদ্ধে উঠে আসছে সব চাঞ্চল্যকর তথ্য। যেমন , এর আগে দুবার গ্রেফতার হয় সন্দেহভাজন জঙ্গি আব্দুল রকিব কুরেশি। ২০০৯ সালে খুনের চেষ্টা ও ২০১৪ সালে আদালত চত্বরে তালিবানের হয়ে স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ ওঠে নিষিদ্ধ সংগঠন SIMI-র প্রাক্তন সদস্য কুরেশির বিরুদ্ধে। ২০১৯ সালে কুরেশি জেল থেকে ছাড়া পায়। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর, সোশাল মিডিয়ায় সক্রিয় হয় সে। সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে সন্দেহভাজন IS জঙ্গি সাদ্দামের সঙ্গে পরিচয় হয়।


আর কী কী পরিকল্পনা পরিকল্পনা ছিল কুরেশি-সাদ্দামের?


চলতি মাসেই বিহার বা দিল্লিতে দেখা করার পরিকল্পনা ছিল কুরেশি এবং সাদ্দামের। সন্দেহ এড়াতে বাংলা ও মধ্যপ্রদেশের বাইরে কোনও তৃতীয় স্থানে দু’জনে দেখা করার কথা ছিল। সেই বৈঠকেই কোথায় নাশকতা চালানো হবে তার ছক কষার প্ল্যান ছিল তাদের। 

IS-এর হয়ে ধৃতদের হ্যান্ডলার কে ছিল? টাকার জোগান কোথা থেকে আসত?  জঙ্গিদের জাল আর কোথায় কোথায় ছড়িয়েছে? গোয়েন্দারা জানার চেষ্টা করছেন এই প্রশ্নগুলির উত্তর। 


প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে শুক্রবার, কার্যত এভাবেই তাড়া করে, দ্বিতীয় হুগলি সেতু থেকে দুই সন্দেহভাজন ISIS জঙ্গিকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশের STF। যার মধ্য়ে একজন আবার এম টেকের ছাত্র! ধৃতদের নাম মহম্মদ সাদ্দাম ওরফে সাদ্দাম মল্লিক এবং সইদ আহমেদ। হাওড়ার টিকিয়াপাড়ায় ফ্ল্যাট রয়েছে সাদ্দামের। তিনি আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এম টেকের ছাত্র। পরিবারের, দাবি সাদ্দাম এয়ারফোর্স, রেল এবং এমবিএ-র প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। সইদ আহমেদের বাড়ি হাওড়ার শিবপুরে। পুলিশের দাবি, ধৃতদের থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, অনেকগুলি ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, হার্ড ডিস্ক উদ্ধার হয়। ধৃতদের বিরুদ্ধে, দেশ বিরোধী কাজ, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং অস্ত্র সংগ্রহের ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। এরপর তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে উঠে আসা তথ্যের ভিত্তিতে মধ্যপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার করা হয় কুরেশিকে।