কলকাতা : দক্ষিণ কলকাতার কলেজে 'গণধর্ষণে'র ভয়ঙ্কর অভিযোগ। কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যে ভর সন্ধেবেলা ঘটে ভয়াবহ নির্যাতন। অভিযোগ নির্যাতিতার। ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই পুলিশের জালে অভিযুক্ত তিন জন। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র কলেজের প্রাক্তনী, তিনি আবার শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের প্রাক্তন নেতা, অধুনা শাসক দলের সঙ্গে বিশেষ ঘনিষ্ঠ। দাবি তার সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে। মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র আইন প্র্যাকটিস করেন আলিপুর আদালতে । ধৃত জাইব আহমেদ কলেজের ও প্রমিত মুখোপাধ্যায়ও কলেজের বর্তমান পড়ুয়া। আর জি কর কাণ্ডের এক বছরের মধ্যে এই ঘটনায় তোলপাড় পড়ে গিয়েছে সারা রাজ্যে। ফের প্রশ্নের মুখে কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রীদের নিরাপত্তা।
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, 'কলকাতা পুলিশকে তো পুরো নিয়ে চলে গিয়েছে দিঘাতে। লোক তো নেই দিঘায় । জামা খুলিয়ে পুলিশকে দিয়ে হাঁটাবে। এই মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে থাকার যোগ্যতা নেই। আমরা ইস্যু টেক আপ করছি। খুব বড় জিনিস হবে।' শুভেন্দু আরও বলেন, এই অ্যারেস্টও লোক দেখানো, এই ঘটনার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ করা উচিত।
অন্যদিকে কেন্দ্রের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেন, অভয়াকাণ্ডের পর আবার এক কলেজে মধ্যে এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। যারা অভিযুক্ত, তাদের মধ্যে একজন ওই কলেজেরই প্রাক্তনী, স্টাফ ! সুকান্ত বলেন, 'খোঁজ নিয়ে দেখুন, যারা অভিযুক্ত তারা তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও না কোনও ভাবে যুক্ত। আর জি কর কাণ্ডের পর প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে কলেজে শিক্ষাকেন্দ্রগুলির কোনও নিরাপত্তা নেই। ' সুকান্ত মজুমদার আরও বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী যতই রথ টানুন না কেন...কালীগঞ্জে মেয়েকে বোমা মেরে খুন করা হচ্ছে, মেয়েদের ইজ্জত লুঠ করা হচ্ছে..আর জি করে অভয়াকে ধর্ষণ করে খুন করা হল...এই পাপের হাত থেকে উনি বাঁচবেন না'
এই ঘটনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্যও। 'কসবার ঘটনা নিন্দনীয়, অসহনীয়। দ্রুত গ্রেফতারির জন্য প্রশাসনকে ধন্যবাদ। বাংলা বলেই এত দ্রুত গ্রেফতার হয়। গলায় মালা পরিয়ে সম্বর্ধিত করা হয় না। কোন বর্বর ব্যক্তি কোন মুহূর্তে বর্বরোচিত আচরণ করবেন তার আগাম ইঙ্গিত পাওয়া কখনোই সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে দেখার বিষয়, নির্দিষ্ট রাজ্যের প্রশাসন আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াচ্ছে, নাকি অপরাধীদের পাশে', কসবার ঘটনা নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করেন তৃণমূলের সোশাল মিডিয় সেলের ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্যের।
পুলিশ সূত্রে খবর, ন্যাশনাল মেডিক্যালে অভিযোগকারিণীর মেডিক্যাল টেস্ট করা হয়েছে। নমুনা সংগ্রহে গিয়েছে ফরেন্সিক টিম। ধৃত তিন জনের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।