কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা : দক্ষিণ কলকাতায় কলেজের মধ্যেই ঘটে গিয়েছে ন্যক্কারজনক ঘটনা। কলেজের ছাত্রীকেই গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল ক্যাম্পাসের মধ্যে।  অভিযোগকারিণীর অভিযোগের ভিত্তিতে  গতকাল রাতেই গ্রেফতার হয় ৩ জনকে। জানা গিয়েছে, ধৃত মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র ওই কলেজেরই প্রাক্তনী। সেই সঙ্গে গ্রেফতার হয়েছে ওই কলেজেরই পড়ুয়া আরও ২ জন। 

জানা গিয়েছে, ধৃত মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র কলেজের প্রাক্তনী । গত ২৫ জুন কলেজের একটি অনুষ্ঠানে ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন মনোজিৎ । জানা গিয়েছে, মনোজিৎ আলিপুর আদালতেই প্র্যাকটিস করে। সোশ্যাল মিডিয়ায় মনোজিৎ দাবি করেছেন, তিনি তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদ করতেন।  তিনি ওই কলেজের ইউনিট প্রেসিডেন্ট ছিলেন বলেও দাবি করেছেন মনোজিৎ ।  তার সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলে শাসক দলের নানা কর্মসূচিতে তার ছবি রয়েছে। দক্ষিণ কলকাতার শাসক দলের নেতাদের সঙ্গেও তার ছবি রয়েছে। ২ দিন আগেও তিনি দক্ষিণ কলকাতার যুব তৃণমূলের সভাপতি পদে সার্থক বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচিত হওয়ার পরে তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে আসে এই মনোজিৎ। যদিও তৃণমূল ছাত্র পরিষদ তার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করার চেষ্টা করছে এখন। ওই কলেজের ছাত্র ছাত্রীরাও, মনোজিৎকে শাসকদলের ঘনিষ্ঠ হিসেবেই চেনে। কলেজের গভর্নিং বডির সঙ্গেও তার ওঠাবসা ছিল বলেই জানা যাচ্ছে। তাছাড়া মনোজিৎ মিশ্রকেই কয়েকদিন আগে কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি অশোক কুমার দেবের অনুমতিতে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে নিয়োগ করা হয়। তাহলে কি সেই সুযোগেই সেদিন সন্ধেয় কলেজে ঢুকেছিল ওই প্রাক্তনী? সেই ক্ষমতা বলেই কি নির্যাতিতাকে জোর করে প্রাক্তনী? প্রশ্ন অনেক।

সূত্রের খবর,  সাউথ ক্যালকাটা ল'কলেজে ছাত্র সংসদ ছিল TMCP-র দখলে। তার সভাপতি ছিলেন এই মনোজিৎ মিশ্র। তবে দীর্ঘদিন ধরে সেখানে নির্বাচন হয়নি।  কিন্তু অভিযোগ, কলেজে একছত্র দাদাগিরি চালাতেন TMCP ইউনিটের প্রাক্তন সভাপতি । কলেজে পরিচিত ছিলেন ম্যাঙ্গো নামে। কলেজের দেওয়ালে দেওয়ালে লেখা 'মনোজিৎ দাদা ইজ ইন আওয়ার হার্টস!' কলেজের গায়ে খোদাই করা এই বার্তা যাকে ঘিরে,  সেই মনোজিৎ মিশ্রই সাউথ ক্যালকাটা ল'কলেজের ছাত্রীকে গণধর্ষণে প্রধান অভিযুক্ত। 

যদিও তৃণমূলের নেতারা, যাঁদের সঙ্গে মনোজিতের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় রয়েছে, তাঁরাও বলছেন, সে টিএমসিপির সঙ্গে যুক্ত ছিল। এখন আর নয়। অভিযুক্ত মনোজিতের কঠোর শাস্তি চেয়েছেন  তৃণমূল নেতা দেবাশিস কুমারও।