ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: তরতাজা যুবকের মৃত্যু জলাতঙ্কে। শোকে কার্যত নিথর গোটা পরিবার। কিন্তু হয়রানি থেকে নিস্তার মিলল না। কুসংস্কারাচ্ছন্ন গ্রামবাসীরা ছেলের দেহ ফেরাতেই দিলেন না বলে অভিযোগ। ভিটেমাটি থেকে দূরে, শহর কলকাতাতেই (Kolkata News) সারতে হল শেষকৃত্য (Superstitions)। একদিকে ডিজিটাল ইন্ডিয়া, ফাইভ জি নিয়ে যেখানে মাতামাতির শেষ নেই। সেখানে এহেন মধ্যযুগীয় ঘটনায় হতবাক অনেকেই (Kolkata News)।
বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ যুবকের
কুসংস্কারের ছায়ায় ফের বেনজির ঘটনা রাজ্যে। গত ১৩ জুন জলাতঙ্কে আক্রান্ত নদিয়ার (Nadia News) চাকদার বাসিন্দা, বছর ৩৫-এর এক যুবকের মৃত্যু হয়। কলকাতার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তরতাজা যুবকটি চোখের সামনে শেষ হয়ে যাওয়ায় শোকে পাথর হয়ে যায় গোটা পরিবার।
কিন্তু শেষকৃত্যের কথা উঠলে শুরু হয় ঝামেলা। প্রথমে অর্থের অভাবের কথা বলে মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে যেতে অপারগতার কথা জানায় ওই পরিবার। তাতে হাসপাতল কর্তৃপক্ষই বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগী হন। কিন্তু তাতেও মেটেনি সমস্যা। হাসপাতালের তরফে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হলে জানা যায়, সংক্রমণের ভয়ে গ্রামবাসীদের একাংশ, জলাতঙ্কে মৃত যুবকের মৃতদেহ গ্রামে সৎকার করতে দিতে নারাজ। তা নিয়ে হাসপাতালের কর্মীদেরও পড়তে হয় সমস্যার মুখে।
আরও পড়ুন: Panchayat Election 2023: বগটুইয়ের নিহত ২ BJP কর্মীর পরিবারের সদস্যরা প্রার্থী হলেন পঞ্চায়েত ভোটে
এই পরিস্থিতিতে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ অমিতাভ চট্টোপাধ্যায়ের উদ্যোগে কলকাতার নিমতলা মহাশ্মশানে ওই যুবকের দেহ সৎকারের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু এই গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে সাধারণ কর্মীরা। জলাতঙ্ক রোগীর সৎকার ঘিরে সংক্রমণের ভাবনা কোথা থেকে এল, তা ভেবে কিনারা করতে পারছেন না কেউই। গোটা ঘটনায় কার্যতই স্তম্ভইত সকলে।
জলাতঙ্কে মৃত্যু বলে গ্রামে দেহ ঢোকাতে বাধা! চূড়ান্ত হয়রানির শিকার পরিবার
এর আগে, করোনার জেরে উদ্ভুত অতিমারির সময় সংক্রমণের ভয়ে এই ধরনের ঘটনা সামনে এসেছিল। কিন্তু জলাতঙ্কের মতো রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনাতেও, দেহ সৎকার নিয়ে এই কুসংস্কার দেখে হতবাক সকলে। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে চিকিৎসক অগ্নিশ অধিকারী এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। উপাধ্যক্ষের হস্তক্ষেপে শেষ মেশ কলকাতাতেই সৎকার হয়।