কলকাতা : কলকাতার হাসপাতালে বিরল রোগে মৃত্যু হল উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা এক ব্যক্তির। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর শরীরে হানা দিয়েছিল ফ্লেশ ইটিং (Flesh Eating) বা মাংস খেকো ব্যাকটেরিয়া (Bacteria)। এই রোগে মৃত্যুর হার অত্যন্ত বেশি।


মৃত্যুর মিছিল দেখিয়েছে করোনার একের পর এক স্ট্রেন। আতঙ্ক বাড়িয়েছে স্ক্রাব টাইফাস থেকে ব্ল্যাক ফাংগাস ! মারণ থাবা বসিয়েছে ডেঙ্গি ! এরই মধ্যে কলকাতার হাসপাতালে বিরল রোগে মৃত্যু হল উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা এক ব্যক্তির। রোগের নাম নেক্রোটাইজিং ফ্যাসিয়াটিস। চিকিৎসকরা বলছেন, এটি ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ। এমন ব্যাকটেরিয়া, যা মানুষের শরীরের মাংস দ্রুত খেয়ে পচন ধরিয়ে দেয়। এই রোগে মৃত্যুর হার অত্যন্ত বেশি।


বিরল রোগ নেক্রোটাইজিং ফ্যাসিয়াটিস-


হাসপাতাল সূত্রে খবর, কিছু দিন আগে ট্রেন থেকে পড়ে বাঁ পায়ে চোট পান বছর ৪৪-এর ওই ব্যক্তি। প্রথমে তাঁকে ভর্তি করা হয় হাবড়া হাসপাতালে। বাঁ পায়ে ক্ষত বাড়তে শুরু করলে গত ২৩ তারিখ আনা হয় আরজি করে। পরীক্ষা করে জানা যায়, তিনি বিরল নেক্রোটাইজিং ফ্যাসিয়াটিস রোগে আক্রান্ত। শনিবার তাঁর মৃত্যু হয়। 


আরজি কর হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক হিমাংশু রায় বলেন, পেছন দিকে লোহার রড ঢুকে গিয়েছিল। তখন থেকেই ইমফেকশন শুরু হয়। যখন আমরা রোগীকে পাই, তখনই তাঁর শ্বাসকষ্ট ছিল। ক্রিয়েটিনিন লেভেলটা বেশি ছিল। ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছিল।


কিন্তু একটি মাত্র ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে এই রোগ হয় না। একাধিক ব্যাকটেরিয়া সংঘবদ্ধ হয়ে আক্রমণ করে চামড়া ও পেশীর মাঝের স্তরে। চিকিৎসকরা বলছেন, দ্রুত রোগ নির্ণয় করা গেলে সংক্রমিত অংশ কেটে বাদ দিয়ে অনেক ক্ষেত্রে বাঁচানো যায় রোগীকে। 


এসএসকেএম হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার বলছেন, ফাসাইটিস মানে চামড়ার তলায় যেসব টিসু থাকে, তার পচন। কোনও একটা কারণে হঠাৎ করে মাসল এবং ফাসাইয়ে পচন ধরতে শুরু করে । দুই-তিন ধরনের প্রজাতির ব্যাক্টেরিয়ার একটা নির্দিষ্ট অনুপাতে মিশ্রণ হয়ে যায়। তখন অ্যাটম বোমের মতো জায়গাটায় বিস্ফোরণ হয়। লাভার মতো গড় গড় করে দশদিকে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে মৃত্যু ঘটতে পারে।


আরও পড়ুন ; ছাগলের কানের হাড় বসল মানব দেহে! অসাধ্যসাধন আরজি কর-এ