ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: ছাগলের (Goat) কানের কার্টিলেজ ব্যবহার করে মানব দেহে প্লাস্টিক সার্জারি (Plastic Surgery) । এমনই অসাধ্য সাধন করেছেন, একদল গবেষক চিকিত্‍সক। ১৮ জনের ওপর হয়েছে সফল অস্ত্রোপচার।  


ছাগলের কান দিয়ে মানুষের কানে ও নাকের প্লাস্টিক সার্জারি। হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন, এমনই অবাক করা কাণ্ড ঘটিয়েছেন, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মত্‍স্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন চিকিত্‍সক-গবেষক। পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মত্‍স্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সিদ্ধার্থ জোয়ারদার বলেন, "বহু ক্ষেত্রে নাক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুর্ঘটনায় কান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটা প্রকৃতিবান্ধব প্রক্রিয়া ।ছাগলের কানের বিশেষ অংশ কার্টিলেজ দিয়ে প্লাস্টিক সার্জারি। তিন বছর ধরে দেখা গেছে, সবাই সুস্থ।" 


আরও পড়ুন, লিঙ্কে ক্লিক করতেই ফোন হ্যাক ! ছবি বিকৃত করে পর্ন সাইটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি 


ইতিমধ্যেই ১৮ জন রোগীর ওপর হয়েছে অস্ত্রোপচার। প্রায় তিনবছর ধরে, পর্যবেক্ষণের পর দেখা গেছে, সফল হয়েছে সার্জারি। তবে, এই প্রক্রিয়ায় সবথেকে কঠিন বিষয় হল, ছাগলের কানের কার্টিলেজের প্রক্রিয়াকরণ ও তা সংরক্ষণ। 


পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মত্‍স্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরিতে বিশেষভাবে শোধন করে, বিক্রিয়াশীল অংশ বাদ দিয়ে, সেল কালচার পদ্ধতিতে, সংরক্ষণ করা হয় তরুণাস্থি বা কার্টিলেজ। বিশেষভাবে প্রক্রিয়ার ফলে, এই কার্টিলেজ মানুষের শরীরে মিশে যেতে পারে।  


এরপর আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের, বিভাগীয় প্রধান রূপনারায়ণ ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে, এই হাসপাতালেই ১৮জনের ওপর হয় অস্ত্রোপচার। কার্টিলেজের সফল প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণ পদ্ধতির জন্য, ভারত সরকারের ডিপার্টমেন্ট অফ বায়োটেকনোলজির তরফে পেটেন্ট পেয়েছেন এই চিকিত্‍সক-গবেষকরা। 


যে ল্যাবে ছাগলের কানের বিশেষ অংশ প্রক্রিয়াকরণ হয়েছে, সেখান থেকে গবেষকরা পেটেন্ট পেল। পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মত্‍স্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর অফ সার্জারি সমিত নন্দী বলেন, "পরিবেশবান্ধব জিনিস ব্যবহার করে। ওয়েস্ট হিসেবে যেটা ফেলে দেওয়া হয়। তখন মাথায় আসে, ছাগলের কানের একটা কার্টিলেজ। কীভাবে কাজে লাগানো যায়। অনেকসময়ই মানুষের শরীর নেয় না। তাই বিশেষ প্রক্রিয়া।" তিনি এও বলেন,  "এই প্রতিস্থাপনে কী সুবধা? আর্টিফিসিয়ালের রিজেকশন বেশি। দাম বেশি। এটার দাম কম.. ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়ে করা হচ্ছে।" ভবিষ্যতে এই বায়োলজিক্যাল ইমপ্ল্যান্টের প্রবণতা আরও বাড়বে বলে আশাবাদী চিকিত্‍সক-গবেষকরা।