ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা : কসবায় ভরসন্ধেয় কাউন্সিলরের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় এবার জালে 'মাস্টারমাইন্ড' ইকবাল। বাইকে চেপে হাওড়া হয়ে বর্ধমানের দিকে পালাচ্ছিল সে। সেই সময় তাকে পাকড়াও করা হয়। বাইকে চেপে জাতীয় সড়ক দিয়ে পালানোর সময় দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে গলসি থানার পুলিশের তল্লাশি জালে ধরা পড়ে ইকবাল, এমনই খবর সূত্রের। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল কাউন্সিলরের উপর হামলার ঘটনার নেপথ্যে কি শুধুই ইকবাল ? তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। কিন্তু কে এই ইকবাল ? কেন সে তৃণমূল কাউন্সিলরকে খুনের সুপারি দিল, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষের উপর হামলার ঘটনায় ট্যাক্সিচালক-সহ ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ইকবালের আসল নাম আফরোজ খান। তার আরেকটা নাম গুলজার। ঘটনায় এর আগে ধৃত যুবরাজ সিংকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে, কাউন্সিলরকে গুলি করার বরাত দিয়ে তাকে মাত্র ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল। এই যুবরাজের কাছ থেকেই ইকবাল সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়া এক ট্যাক্সি চালককে গ্রেফতার করা হয়। গোটা ঘটনা সম্পর্কে সে ওয়াকিবহাল থাকা সত্ত্বেও পুলিশকে না জানানোয় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপর পুলিশ আধিকারিকরা ইকবালকে ধরার চেষ্টা শুরু করেন। গতকাল রাত থেকেই সে পালানোর ছক করছিল। এমনটাই বলছেন লালবাজারের পুলিশ আধিকারিকরা। মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন, সিসি টিভি ফুটেজ দেখে পুলিশের কাছে তথ্য আসে যে, এই ঘটনার মূল চক্রী হাওড়া হয়ে বাইকে করে পালানোর চেষ্টা করছে।
পুলিশ এই তথ্যও পায় যে, বাইকে করে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে আসালসোল হয়ে সম্ভবত ঝাড়খণ্ড-বিহারের দিকে পালিয়ে যেতে পারে। এরপরই কলকাতা পুলিশের তরফে বর্ধমানের পুলিশ সুপার এবং বর্ধমান রেঞ্জের আইজিপিকে বিষয়টি জানানো হয়। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপর গলসি থানার তরফে একটি নাকা পয়েন্ট তৈরি করা হয়। সেদিক দিয়ে যাওয়ার সময়ই পুলিশ 'মাস্টারমাইন্ড' ইকবালকে ধরে ফেলে।
গতকাল ভর সন্ধেয় দক্ষিণ কলকাতার ব্য়স্ত এলাকা অ্য়াক্রোপলিস মলের কাছে, বাড়ির সামনে ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে একেবারে সামনে থেকে গুলি করার চেষ্টা করে এক দুষ্কৃতী। কিন্তু বারবার চালানোর চেষ্টা করলেও বেরোয়নি গুলি। ঘটনায় ধাওয়া করে এক হামলাকারীকে ধরে ফেলে স্থানীয়রা। সিসিটিভি ক্য়ামেরায় ধরা পড়ে সেই সময়কার ছবি। ঘটনায় বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে একটি 9 MM পিস্তল। কসবায় রাস্তার ওপর, তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে গুলি করে খুনের চেষ্টার ঘটনার পরদিন গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে ঘটনাস্থল। ঘটনায় এক ট্য়াক্সি চালককেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।