ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ৬৪ বছরের এক চিকিত্সককে হুমকি দেওয়া ও কুকথা বলার অভিযোগ উঠল নির্মল মাজির (Nirmal Maji) বিরুদ্ধে। অভিযোগকারী চিকিত্সক মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। যদিও তৃণমূল বিধায়ক পাল্টা কাঠগোড়ায় দাঁড় করিয়েছেন ওই চিকিত্সকে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (Kolkata Medical College and Hospital) ঘটনায় শুরু হয়েছে এই বিতর্ক।
ফের বিতর্কে তৃণমূলের চিকিত্সক নেতা ও বিধায়ক নির্মল মাজি। মে মাসের শুরুতেই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধানকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ও ৬ জন সহকারী সুপার দু’একদিন আগেই তৃণমূলের এই চিকিত্সক নেতার রোষে পড়েছেন।
কী অভিযোগ?
এবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ৬৪ বছরের এক চিকিত্সককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে বিতর্কে জড়ালেন তৃণমূল বিধায়ক। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার ঘটনার কথা জানিয়ে অভিযোগকারী চিকিত্সক কুণাল পান মুখ্যমন্ত্রীর দফতর ও স্বাস্থ্যভবনে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন, ‘টাকা এখান থেকে তুলে নিয়ে ভাগ বসায়’, অভিযোগ করে মোদিকে চিঠি মমতার
রোগী ভর্তি হতে কেন দেরি হচ্ছে, এই প্রশ্ন তুলে জরুরি বিভাগের চিকিত্সককে যা তা বলে অপমান করেছেন নির্মল মাজি। এই অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্ট চিকিত্সক। সূত্রের দাবি, অভিযোগপত্রে চিকিত্সক কুণাল পান লিখেছেন, বুধবার দুপুর ৩টে ১০ নাগাদ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান নির্মল মাজি এক রোগীকে ভর্তির জন্য পাঠান। ভর্তির কাগজপত্র লিখতে কিছু সময় লাগে। দুপুর সাড়ে ৩টে নাগাদ নির্মল মাজি জরুরি বিভাগে ঢুকে, ভর্তি হতে কেন দেরি হচ্ছে, এই বলে চিত্কার শুরু করেন।
নির্মল সাফাই
অভিযোগকারী চিকিৎসকের দাবি, নির্মল মাজি বলেন, কেন তিনি তাঁর দিকে ছাগলের মতো তাকিয়ে আছেন? সিনিয়র অফিসার অন ডিউটি’কে গাধার বাচ্চা বলেও সম্বোধন করেছেন নির্মল মাজি, এই কথাও অভিযোগপত্রে লেখা হয়েছে। যদিও ক্যামেরা সামনে অভিযোগকারী চিকিত্সক কিছু বলতে চাননি। ঘটনায় অভিযোগকারী চিকিত্সককেই পাল্টা কাঠগোড়ায় তুলেছেন নির্মল মাজি।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির তৃণমূল বিধায়ক ও চেয়ারম্যান নির্মল মাজি বলেন, "ওই ডাক্তার ঝিমোচ্ছিলেন। ভিতরে যে জুনিয়র ডাক্তাররা ছিল, তারা বই পড়ছিলেন। আমি ওদের রোগী কল্যাণ সমিতির মিটিংয়ে ডেকে পাঠিয়েছি।"
সূত্রের খবর, হাসপাতালের ভাইস প্রিন্সিপাল সব্যসাচী দাস ঘটনার পর জরুরি বিভাগে গিয়ে চিকিত্সক কুণাল পানের সঙ্গে কথা বলেন। ঘটনায় নির্মল মাজির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে একটি চিকিত্সক সংগঠন। অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস এর সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, "ওই চিকিত্সককে অভিনন্দন জানাই। নির্মল মাজি আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারতেন। কিন্তু সকলের সামনে চিকিত্সককে এই ভাষা প্রয়োগ করা ঠিক হয়নি।"
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনা নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি।