কলকাতা: এবার চিনার পার্কের নামী রেস্তোরাঁয় আগুন। বৃহস্পতিবার সকালে কষে কষার আউটলেটে আগুন লাগে। আশেপাশে একাধিক দোকান থাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। আগুন নেভানোর কাজে এগিয়ে আসেন স্থানীয়রা। পরে দমকলের ২টি ইঞ্জিন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। 

নামী রেস্তোরাঁয় আগুন: বড়বাজারের হোটেলে অগ্নিকাণ্ডে ১৪ জনের প্রাণহানির ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে ফের আগুন লাগল শহরে। বড়বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ২ দিনের মাথায় এবার চিনার পার্কে নামী রেস্তোরাঁয় আগুন লাগল। সকাল ৭টা নাগাদ কষে কষার আউটলেটে ধোঁয়া দেখতে পান স্থানীয়রা। নিমেষের মধ্যে আগুন ভয়ঙ্কর আকার নেয়। আশেপাশে একাধিক বহুতল ও দোকান রয়েছে। রেস্তোরাঁর ভিতরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের আশঙ্কা ছিল। স্বভাবতই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এলাকার লোকজনই প্রথমে পাইপ জোগাড় করে জল দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে দমকলের ২টি ইঞ্জিন গিয়ে একঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান। 

দিন দুয়েক আগেই বড়বাজারের মেছুয়র ৬ নম্বর মদনমোহন বর্মন স্ট্রিটের ঋতুরাজ হোটেলে আগুন লাগে। সেখানেই কেউ দমবন্ধ হয়ে, কেউ ঘুমের মধ্য়ে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঢলে পড়লেন মৃত্য়ুর কোলে। আশ্রয়ই হয়ে উঠল প্রাণঘাতী। অকালে চলে গেল ১৪টা তরতাজা প্রাণ। কিন্তু কার ভুলে এতবড় দুর্ঘটনা? দায় কার? এতগুলো প্রাণ চলে যাওয়ার জন্য় কারা দায়ী? হোটেলে আগুন কীভাবে এত ভয়াবহ আকার নিল? ঘটনায় হোটেল কর্তৃপক্ষের ঘাড়েই দায় চাপিয়েছেন দমকলমন্ত্রী। মঙ্গলবার সন্ধেয় অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে বেপাত্তা হয়ে যান হোটেল মালিক। বুধবার হোটেলের ম্যানেজারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এদিন সকালে গ্রেফতার করা হয় মালিককে। এক দমকল কর্মী বলেন, " সবাই নিজের ঘর বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু ভিতরে ধোঁয়া ঢুকে দমবন্ধ করে দিয়েছে। কাচ ভাঙতে পারেনি। শাবল দিয়ে মেরেছে, কাচ ভাঙছে না। যখন আগুন নিভে গেছে পুরো, সমস্ত দরজা ভাঙা হল, দেখছি ভিতরে বডি পড়ে আছে একটা- দু’টো লোক।''

এদিকে বড়বাজারের মেছুয়ায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেফতার ঋতুরাজ হোটেলের মালিক আকাশ চাওলা ও ম্যানেজার গৌরব কাপুর। হোটেলের মালিক ও ম্যানেজারের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুন, গুরুতর আঘাত-সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে আগুন লাগার পর গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয়েছিল মদনমোহন বর্মন স্ট্রিটের ৬ তলা হোটেল। ১৪ জনের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে জোড়াসাঁকো থানার পুলিশ। তল্লাশি চালিয়ে আজ ভোরে হোটেল মালিক ও ম্যানেজারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অন্যদিকে, ১৪ জনের মধ্যে ১২ জনের দেহ শনাক্ত করা হয়েছে। হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুর কমিশনারের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে তদন্ত কমিটি। আজ ঘটনাস্থলে যাবেন কমিটির সদস্যরা।