আবির দত্ত ও সুদীপ্ত আচার্য, এবিপি আনন্দ, কলকাতা: দুর্গাপুরের ছায়া এবার আনন্দপুরে। আনন্দপুরে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীকে তাঁর ফ্ল্যাটে গিয়ে অচৈতন্য করে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল তাঁর সহপাঠীর বিরুদ্ধেই। গতকাল সরশুনা থেকে অভিযুক্ত রাজদীপ রায়কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটে ২৬ সেপ্টেম্বর। এরপর ৮ অক্টোবর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা তরুণী। তদন্তে নামে পুলিশ। সরশুনায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপন করেছিল অভিযুক্ত। মঙ্গলবার সেখান থেকেই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালতে তোলা হলে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। অন্যদিকে, এদিন দুর্গাপুরকাণ্ডে নির্যাতিতার বাবা এবিপি আনন্দকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, সবাইকে আমি একটাই বার্তা দিচ্ছি, 'আমার মেয়ের যেমন লাইফটা-কেরিয়ারটা নষ্ট করে দিল, তোমরা কাউকে বিশ্বাস কোরো না।' তাহলে একের পর এক এই ধরনের ঘটনায় সহপাঠীদের ওপরে বিশ্বাসের জায়গাটা কোথাও কি ভেঙে যাচ্ছে ?

Continues below advertisement

অ্যারিস্টটল বলেছিলেন, বন্ধুত্ব হল দুটি দেহে বসবাসকারী একক আত্মা। কিন্তু দুর্গাপুর থেকে আনন্দপুর, দুই প্রান্তে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল নির্যাতিতাদের সহপাঠী অর্থাৎ বন্ধুদের বিরুদ্ধেই। যে সহপাঠীর সঙ্গে ওঠাবসা, ক্লাস করা, খেতে-ঘুরতে যাওয়া, সেই তাদের বিরুদ্ধেই কিনা উঠছে ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের অভিযোগ। দুর্গাপুরে ডাক্তারি পড়ুয়ার গণধর্ষণে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর সহপাঠীকে। আর আনন্দপুরে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াকে ধর্ষণের অভিযোগে ধৃত তাঁরই সহপাঠী।

গত ২৬ সেপ্টেম্বর, কলকাতার বুকে আনন্দপুরের একটি ফ্ল্যাটে হেরিটেজ ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি-র ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে তাঁরই এক সহপাঠীর বিরুদ্ধে। তরুণীর অভিযোগ, ফ্ল্যাটে এসে তাঁকে অচৈতন্য করে ধর্ষণ করে সহপাঠী রাজদীপ রায়।  সূত্রের খবর, ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে একাই থাকতেন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। ঘটনার ১২ দিনের মাথায় আনন্দপুর থানায় দায়ের হয় অভিযোগ। তারপর থেকেই বেপাত্তা ছিল অভিযুক্ত। অবশেষে মঙ্গলবার নির্যাতিতার সহপাঠী, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র রাজদীপ রায়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। সূত্রের খবর, সরশুনা এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে লুকিয়ে ছিল অভিযুক্ত। মঙ্গলবার ধৃতকে আলিপুর আদালতে তোলা হলে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। 

Continues below advertisement

এ প্রসঙ্গে সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষাল বলেন, "অভিযোগের ভিত্তিতে কেস শুরু করা হয়। কিছুদিন পর অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। কাল আদালতে তোলা হয়। আদালত ২২ তারিখ পর্যন্ত পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছে।"

পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার সময় ধৃতের পরনে থাকা পোশাক ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। করা হবে মেডিকো লিগাল টেস্ট।