কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ আদালত কর্মচারি সমিতির তরফে এদিন জানানো হয়, তাঁরা হাজিরা খাতায় সই করে আন্দোলনে (Agitation) নেমেছেন। তাদের বক্তব্য, বারবার দাবি জানানো সত্বেও সরকার তাঁদের ডিএ (DA) দিচ্ছে না। হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও এদিন বকেয়া ডিএ-র দাবিতে আজ ও কাল সরকারি অফিসে (Govt Office) ৪৮ ঘণ্টা কর্মবিরতির সিদ্ধান্তে অনড় আন্দোলনরত রাজ্য সরকারি কর্মীরা। আর এমনই এক আবহে ধরা পড়ল উলটপূরাণ। এই আন্দোলনে সরকারি কর্মীদের একাংশ ফল নিয়ে খুব একটা বিশ্বাসী নন। এমনটা নয় যে, তাঁরা বকেয়া ডিএ চান না। বরং এদিন হতাশই লক্ষ্য করা গেল তাঁদের কথায়। 'কর্মবিরতি করে লাভ হবে না, ডিএ বাড়বে না', এদিন এমনই বিতর্কিত (Controversy) মন্তব্য শুনতে সরকারি কর্মীদের একাংশের মুখে।
অপরদিকে, এদিন খাদ্য ভবনে শুনতে পাওয়া যায় ভিন্ন মতামত। একদিকে কর্মবিরতির সিদ্ধান্তে অনড় থেকে রাজ্য সরকার বিরোধী স্লোগান দিতে দিতে অবস্থান করছেন সরকারি কর্মীচারিরা। পাশাপাশি, তারই পাশে সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন যারা রয়েছেন, তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিনন্দন জানিয়ে তাঁরা এখানে কিন্তু, পাল্টা স্লোগান এখানে দিচ্ছেন। তাঁদের বক্তব্য, যারা উন্নয়নকে স্তব্ধ করতে চাইছে, তাঁদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই। বাংলার উন্নয়ন যেভাবে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তাঁকে যারা বাধা দেবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই। এত আর্থিক বঞ্চনা সত্বেও আমাদের মুখ্যমন্ত্রী ৩ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি করে দিয়েছেন। তাতে আমরা খুশি আছি।'
যদিও ৩ শতাংশ DA বৃদ্ধির পরও, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের সঙ্গে রাজ্য সরকারি কর্মীদের DA-এর ফারাক রয়েছে ৩২ শতাংশ। এরই প্রতিবাদে, সোম ও মঙ্গলবার রাজ্য সরকারের দফতরে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। যার মোকাবিলায় শনিবার এই কড়া সার্কুলার জারি করে নবান্ন। অর্থ দফতরের প্রধান সচিব মনোজ পন্থের জারি করা নির্দেশিকায় উল্লেখ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। নবান্ন এই সার্কুলার জারি করতেই, আরও ঝাঁঝ বাড়িয়েছেন DA-এর দাবিতে আন্দোলনকারীরা। রবিবার আন্দোলন স্থলে, প্রতীকী সার্কুলার জ্বালিয়ে, জানানো হয় প্রতিবাদ। দাবি আদায় না করা পর্যন্ত চলবে এই আন্দোলন। ২০ ও ২১ ফেব্রুয়ারি সারাদিনের জন্য কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন।
আরও পড়ুন, 'ভাড়াটে খুনিকে কাজে লাগানো হয়েছিল', তৃণমূল বুথ সভাপতি খুনে বিস্ফোরক তথ্য
সরকার কড়া মনোভাব দেখানোর পরেও সেটা করবেনই বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। সরকার ভয় পেয়েছে বলেও দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। আর সেই দাবিতে অনড় থেকেই আজ ও কাল সরকারি অফিসে ৪৮ ঘণ্টা কর্মবিরতির সিদ্ধান্তে অনড় আন্দোলনরত রাজ্য সরকারি কর্মীরা। ধর্না মঞ্চেই আন্দোলনকারীরা একে অন্যকে কর্মবিরতির ব্যাজ পরিয়েছেন। পাশাপাশি, শহিদ মিনারে তাঁদের ধর্না-অবস্থান এদিন ২৫ দিনে পড়ল। অনশন চলছে ১১ দিন ধরে। কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তবু বকেয়া DA-র দাবিতে আন্দোলন জারি থাকবে বলে রাজ্য সরকারি কর্মীরা জানিয়েছেন।