ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা : হুগলি নদীর তীরে রামকৃষ্ণ দেব-স্বামী বিবেকানন্দ-রানি রাসমনির স্মৃতি বিজড়িত তীর্থভূমি। শতাব্দী প্রাচীন ভবতারিণীর মন্দির ( Dakshineswar Kali Temple )। আর এই মন্দিরকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রয়েছে নানা অজানা ইতিহাস। আজ দেশজুড়ে শক্তির আরাধনা, গঙ্গার ধারে এই তীর্থস্থানেও আজ মানুষের উপচে পড়া ভিড়।
কালীপুজোয় ভবতারিণী মায়ের পুজোদক্ষিণেশ্বর মন্দিরে কালীপুজোয় ভবতারিণী মায়ের পুজোর আয়োজন প্রতিবছরের মতোই। ভোর সাড়ে ৫টায় মন্দির খোলার পর বিশেষ আরতি হয় । এরপর মা ভবতারিণীর পুজো। তারপর ধূপ আরতি। কালীপুজোয় সন্ধ্যারতি ও বিশেষ পুজোরও আয়োজন করা হয়েছে।
রামকৃষ্ণদেবের সাধনস্থল১৮৫৫ সালে রানি রাসমনি দক্ষিণেশ্বর মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। তারপর থেকে রামকৃষ্ণদেবের সাধনস্থলে পরিণত হয় এই মন্দির। রামকৃষ্ণের সাধক সত্ত্বা এখানে পরিপূর্ণতা লাভ করে। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে ভবতারিণীর সঙ্গে রাধা-কৃষ্ণের সহাবস্থান। কথিত আছে, এই মন্দিরেই শ্রীকৃষ্ণের দর্শন পেয়েছিলেন ঠাকুর রামকৃষ্ণ। মহাতীর্থের অন্দরমহলের অন্তরে নিহিত রয়েছে এমন নানা লোকগাথা। রামকৃষ্ণের সর্বধর্মের সাধনার সাক্ষী এই দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ি।
৯ বছরের প্রচেষ্টায় তৈরি হয়েছিল দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ি। তবে সেই যাত্রাপথ একেবারেই মসৃণ ছিল না। কৈবর্ত রানি রাসমণির গড়া মন্দির। রে রে করে উঠেছিল ব্রাহ্মণ সমাজ। এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে নানা বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছিল রানি রাসমণিকে। কিন্তু প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও চালিয়ে গিয়েছিলেন লড়াই।
কথিত আছে, দক্ষিণেশ্বরকে বৃন্দাবনের সমতুল্য করে তুলেছিলেন ঠাকুর রামকৃষ্ণ। লোককথা অনুসারে, এই পূণ্যভূমিতেই স্বামী বিবেকানন্দকে ব্রহ্মলোকের স্বাদ পাইছিলেন রামকৃষ্ণ। অথচ সেই স্বামীজিকেই একসময় ঢুকতে দেওয়া হয়নি এই দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে! এই সব নানা অজানা অধ্যায়ের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে এই মহাতীর্থ।